আহমেদাবাদ: ১২ জুন ২০২৫ তারিখে ভারতের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৬০ জন বিমানযাত্রী। ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ ও আগুনে অধিকাংশ মৃতদেহই এমনভাবে বিকৃত হয়ে গেছে যে পরিচয় শনাক্ত করা কার্যত অসম্ভব হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে মৃতদের পরিচয় নিশ্চিত করতে DNA পরীক্ষার দ্বারস্থ হয়েছেন প্রশাসনের বিশেষজ্ঞেরা।

✈️ ভয়াবহ দুর্ঘটনার পরদৃশ্য
বিমান AI-171, যা আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল, তা উড্ডয়নের ৩ মিনিটের মধ্যেই ভেঙে পড়ে। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ২৪১ যাত্রী ও ১৯ জন ক্রুর। জীবিত উদ্ধার হয়েছেন মাত্র একজন। মৃতদের দেহ এতটাই জ্বলে গিয়েছে যে সনাক্তকরণে সমস্যায় পড়েছেন পরিবার ও চিকিৎসকরা।
🔬 DNA পরীক্ষার মাধ্যমে সনাক্তকরণ কীভাবে হয়?
দেহ পুড়ে গেলে চেহারা বা আঙুলের ছাপ দিয়ে সনাক্তকরণ প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে বিজ্ঞাননির্ভর পদ্ধতি হিসাবে DNA প্রোফাইলিং ব্যবহৃত হয়। নিচে ধাপে ধাপে বোঝানো হলো এই প্রক্রিয়া:

🧬 ধাপ ১: নমুনা সংগ্রহ
- মৃতদেহের দাঁত, হাড় বা বেঁচে থাকা টিস্যু থেকে নমুনা নেওয়া হয়।
- পরিবারের সদস্যদের রক্ত বা থুতুর নমুনাও সংগ্রহ করা হয় রেফারেন্স হিসাবে।
🧪 ধাপ ২: DNA নিষ্কাশন ও প্রোফাইল তৈরি
- STR (Short Tandem Repeat) নামক একধরনের বিশেষ টেকনিক ব্যবহার করে প্রতিটি নমুনার DNA প্রোফাইল তৈরি করা হয়।
- প্রতিটি মানুষের DNA প্রোফাইল এক ও অদ্বিতীয় — এই কারণে এটি সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য।
🔍 ধাপ ৩: মিল খোঁজা
- মৃতদেহের DNA প্রোফাইলকে পরিবারের সদস্যদের DNA-এর সঙ্গে তুলনা করে মিল খোঁজা হয়।
- যদি মিল খুঁজে পাওয়া যায়, তাহলে তৎক্ষণাৎ সেই মৃতের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়।
📍 কেন এই প্রক্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ?
- একমাত্র DNA প্রোফাইলিং-ই এমন দুর্ঘটনায় নির্ভুলভাবে মৃতদের পরিচয় দিতে পারে।
- পরিবারগুলিকে মানসিকভাবে সান্ত্বনা দিতে এবং দেহ হস্তান্তরের জন্য সঠিক প্রমাণ থাকা প্রয়োজন।
- সরকার ও প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সঠিক তালিকা তৈরি ও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য এই প্রক্রিয়া আবশ্যিক।
আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনার ভয়াবহতায় গোটা দেশ শোকাহত। এই অবস্থায় DNA পরীক্ষার মাধ্যমে মৃতদের সনাক্তকরণ শুধু প্রযুক্তিগত অগ্রগতি নয়, বরং মানবিকভাবে পরিবারগুলিকে closure পাওয়ার সুযোগও এনে দেয়। এই কঠিন সময়ে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ ও বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনা কিছুটা হলেও আশার আলো দেখায়।

🏥 কী বলছেন প্রশাসন?
BJ মেডিক্যাল কলেজে ইতিমধ্যে বিশেষ DNA সংগ্রহ কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পরিবারগুলো লাইন দিয়ে নমুনা দিচ্ছেন, এবং প্রত্যাশা করা হচ্ছে ৩–৫ দিনের মধ্যেই সনাক্তকরণের কাজ শুরু হবে।
একজন স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, “এটি সময়সাপেক্ষ, তবে এটাই একমাত্র নির্ভরযোগ্য উপায়। আমরা প্রতিটি পরিবারকে যথাযথ সেবা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”