মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা অনুযায়ী, ৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট, বুথভিত্তিক শিবির, এবং ৬০ দিনের মধ্যে ‘সমাধান’—নির্বাচনের আগেই কার্যকর হচ্ছে এক ব্যতিক্রমী সরকারি প্রকল্প।
২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে যেখানে রাজনৈতিক আবহে জোরালো বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ঠিক তার পরদিনই নবান্ন থেকে উঠে এল এক ‘জনমুখী’ প্রকল্পের ঘোষণা। নাম—আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান (Amader Para, Amader Samadhan)।
নামেই স্পষ্ট, এবার পাড়ার সমস্যা সমাধানে আর সরকারি দফতরে ছুটতে হবে না, সরকার নিজেই যাবে মানুষের দরজায়।
২ অগস্ট থেকে শুরু statewide ক্যাম্প
রাজ্যজুড়ে এই প্রকল্প চালু হবে আগামী ২ অগস্ট থেকে। মোট ৮ হাজার কোটি টাকা এই প্রকল্পে বরাদ্দ করা হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, এমন প্রকল্প এর আগে গোটা ভারতে হয়নি।
প্রতিটি এলাকায় তিনটি বুথ নিয়ে তৈরি হবে একটি সেন্টার, যেখানে একদিন করে ক্যাম্প বসবে। পাড়ার মানুষ সরাসরি তাঁদের সমস্যার কথা বলতে পারবেন প্রশাসনের আধিকারিকদের কাছে।
প্রযুক্তির ব্যবহারে স্বচ্ছতা
সব কাজ হবে অনলাইন মাধ্যমে। সমস্যা নথিভুক্ত করা থেকে কাজের অগ্রগতি—সব থাকবে ট্র্যাকিংয়ে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি যেন অটুট থাকে, সেদিকেই নজর প্রশাসনের।
কোন ধরণের সমস্যা নিয়ে যাবে সরকার?
- কোনও পাড়ায় নলকূপ বসানো দরকার
- কোথাও ছোট রাস্তাঘাট মেরামতির প্রয়োজন
- নিকাশি, আলোর ব্যবস্থা ইত্যাদি—এই ধরণের ছোট কাজেই মিলবে সরাসরি সরকারি সমাধান
প্রতিটি কাজের জন্য স্থানীয় প্রশাসন পাবে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
তৈরি হচ্ছে বিশেষ টাস্ক ফোর্স
প্রকল্প রূপায়ণে তদারকি করবে একটি রাজ্যব্যাপী টাস্ক ফোর্স। নেতৃত্বে থাকবেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। বিভিন্ন দফতর থেকে পারদর্শী আধিকারিকদের নিয়েই তৈরি হচ্ছে এই মনিটরিং টিম।
৬০ দিনের মধ্যে কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা
মুখ্যমন্ত্রীর ভাষায়, “সরকারের কাছে আর কারও যেতে হবে না, সরকারই তাঁদের কাছে পৌঁছে যাবে।” তাই আগামী ৬০ দিনের মধ্যেই সব কাজ শেষ করার পরিকল্পনা।
এই সময়ের মধ্যে পড়ছে দুর্গা পূজো। তাই পূজোর সময় কিছুদিন বিরতি দিয়ে বাকি সময় পুরো উদ্যোগ কার্যকর করার রূপরেখা তৈরি।
ভোটের আগে বার্তা?
এই প্রকল্পকে ঘিরে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, এটি ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের আগে একটি গুরুত্বপূর্ণ ‘গ্রাউন্ড স্ট্র্যাটেজি’। ‘দুয়ারে সরকার’-এর পর এবার সরাসরি পাড়ায় গিয়ে সমস্যা সমাধানের মধ্য দিয়ে জনসংযোগ আরও মজবুত করতে চাইছে তৃণমূল।