বীরভূম জেলা তৃণমূল কোর কমিটির সদস্য ও দলীয় দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে নতুন করে শুরু হয়েছে বিতর্ক। সম্প্রতি বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারকে গালাগালির এক অডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। পুলিশ ও দলীয় শীর্ষ নেতৃত্বের তীব্র প্রতিবাদের মুখে অনুব্রত মণ্ডল লিখিতভাবে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন।
গালাগালির অডিও ভাইরাল: পুলিশে এফআইআর, দলের তোপ
বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারের সঙ্গে অনুব্রত মণ্ডলের কথোপকথনের একটি অডিও ভাইরাল হয়, যেখানে তিনি অকথ্য ভাষায় পুলিশের বিরুদ্ধে গালাগালাজ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। যদিও ‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল’ অডিওর সত্যতা যাচাই করেনি, পুলিশ দ্রুত এফআইআর দায়ের করে এবং অনুব্রতকে নোটিস পাঠিয়ে শনিবার থানায় হাজিরার নির্দেশ দেয়।
এই ঘটনা নিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব ক্ষুব্ধ হয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। চার ঘণ্টার মধ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা না চাইলেই শোকজ এবং কঠোর পদক্ষেপের কথাও বলা হয়।
তৎপর অনুব্রত মণ্ডল: নিঃশর্ত ক্ষমা চিঠি
দলের নির্দেশনা পাওয়ার মাত্র চার ঘণ্টার মধ্যে অনুব্রত মণ্ডল দুঃখপ্রকাশ করে লিখিতভাবে ক্ষমা চেয়ে নেন। তার চিঠিতে তিনি বলেন,
“সাম্প্রতিক ঘটনায় আমি দুঃখিত। দিদির পুলিশের কাছে আমি একবার কেন, ১০০ বার ক্ষমা চাইতে পারি।”
চিঠির শেষেও তিনি স্পষ্ট করেন, “কোনও পুলিশ বন্ধু আমাকে ভুল বুঝলে আমি দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।”

অনুব্রত মণ্ডল উল্লেখ করেন, তিনি নানা ধরনের ওষুধ সেবন করেন এবং কখনো কখনো মাথা গরম হয়ে যায়। তিনি আরও প্রশ্ন তুলে বলেন, বোলপুর, সিউড়ি, রামপুরহাটের বিশাল মহামিছিল দেখে কারা ভয় পেলেন এবং আইসিকে গালমন্দর ফুটেজ কে পেল?
অনুব্রত মণ্ডলের অবস্থান ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
অর্থাৎ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব ও পুলিশের কাছে ক্ষমা চাইলেও, অনুব্রত মণ্ডল আইনি প্রক্রিয়া থেকে সহজে রেহাই পেতে পারেন না। বোলপুর থানায় দায়ের হওয়া এফআইআর ও নোটিসের প্রেক্ষিতে শনিবার থানায় হাজিরা বাধ্যতামূলক। পাশাপাশি দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিকেও ক্ষমা চাওয়ার চিঠি পাঠানো হয়েছে।
অনুব্রত মণ্ডল বীরভূমের তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতাদের একজন হিসেবে পরিচিত। পুলিশকে গালিগালাজ করার অভিযোগে তিনি বর্তমানে বিপদের মুখে রয়েছেন। এই ঘটনায় দলের ভাবমূর্তি ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনা করে শীর্ষ নেতৃত্বের তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।