দ্য ইন্ডিয়ান ক্রনিকলস ডিজিটাল ডেস্ক | ২ জুলাই ২০২৫
অভিনেতা সিদ্ধার্থ শুক্লা, গায়ক কেকে কিংবা সাম্প্রতিক কালে অভিনেত্রী শেফালী জরিওয়ালার আকস্মিক মৃত্যুর পরে বারবার একটাই প্রশ্ন সামনে এসেছে— কোভিড টিকার (COVID Vaccine) সঙ্গে কি কোনও ভাবে যুক্ত এই অকালমৃত্যু?



সেই বিতর্ক আরও একবার সামনে এনেছেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। অতিমারির সময় টিকা নিয়ে তাড়াহুড়ো করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। এই আবহেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক, আইসিএমআর এবং এমস-এর যৌথ গবেষণায় পরিষ্কার জানানো হয়েছে— কোভিড টিকার সঙ্গে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।



🧬 কীভাবে চলেছে গবেষণা?
২০২৩ সালের মে থেকে অগস্টের মধ্যে দেশের ৪৭টি হাসপাতাল থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল। ১৮-৪৫ বছর বয়সি এমন বহু প্রাপ্তবয়স্ক যাঁরা শারীরিকভাবে ছিলেন সুস্থ, কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের মার্চের মধ্যে আচমকা মারা যান, তাঁদের বিষয়েই গবেষণা চালানো হয়।
পরে এই একই বিষয় নিয়ে গবেষণায় নামে ICMR ও AIIMS। রিপোর্ট অনুযায়ী, মৃতদের মধ্যে কেউ কেউ টিকা নিয়েছিলেন, আবার কেউ কেউ নেননি। কিন্তু তাঁদের মৃত্যুর কারণ ছিল মূলত:
- দুর্বল হৃদ্পিণ্ড
- আর্থেমিয়ার মতো অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন
- রক্তচলাচলের ঘাটতির কারণে হার্টে পর্যাপ্ত রক্ত না পৌঁছনো
- অতিরিক্ত পরিশ্রম বা উত্তেজনা
🍻 ধূমপান, মদ্যপান এবং অতিরিক্ত পরিশ্রমের প্রভাব
গবেষণা বলছে, আচমকা মৃত্যুর পিছনে আরও কিছু বড় ফ্যাক্টর রয়েছে—
- ধূমপান করলে আচমকা মৃত্যুর সম্ভাবনা ২ গুণ বাড়ে
- সারা রাত ধরে অতিরিক্ত মদ্যপান করলে এই আশঙ্কা ৬ গুণ বেড়ে যায়
- দুর্বল হৃদ্পিণ্ড থাকলে অতিরিক্ত পরিশ্রম করলে মৃত্যু ঝুঁকি ৩ গুণ বৃদ্ধি পায়
- কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পরে যাঁদের হার্টের সমস্যা ছিল, তাঁদের ক্ষেত্রেও মৃত্যুঝুঁকি বেড়েছে ৩ গুণ
💉 কোভিড টিকা: ভয় নয়, সচেতনতা জরুরি
গবেষণার সঙ্গে যুক্ত এক বিশেষজ্ঞ বলেন,
“কোভিড প্রতিষেধক হল এক প্রকার রক্ষাকবচ। টিকার সঙ্গে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোনও সরাসরি সম্পর্ক মেলেনি।”
🎯 সারকথা
এই রিপোর্ট স্পষ্ট করছে, কোভিড টিকা নয়, বরং জেনেটিক ঝুঁকি, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, মদ্যপান-ধূমপান ও অতিরিক্ত মানসিক ও শারীরিক চাপ আচমকা মৃত্যুর পিছনে বড় কারণ। তাই ভুল তথ্য বা আতঙ্কে নয়, বিজ্ঞান ও গবেষণার ওপর ভিত্তি করে সচেতন হওয়াই প্রয়োজন।