কলকাতা: ঈদের দিন এক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকল কলকাতা। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় হাজির হলেন রাজ্যের মন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে। এই সাক্ষাৎকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চর্চা। এটি নিছকই সৌজন্য সাক্ষাৎ, নাকি এর পেছনে রয়েছে গভীর রাজনৈতিক বার্তা?
ঈদের দিন প্রতিবছরই ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যক্তিদের আনাগোনা দেখা যায়। তবে এবারের পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে তৃণমূলের অন্দরে নানা টানাপোড়েনের গুঞ্জন, বিজেপির ক্রমাগত আক্রমণ ও কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের টানাপোড়েনের আবহে অভিষেকের এই উপস্থিতি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

রাজনৈতিক বার্তা নাকি কেবল সৌজন্য?
তৃণমূলের অন্দরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। লোকসভা নির্বাচনের আগে দলের কৌশল নির্ধারণে তিনি প্রধান ভূমিকা পালন করছেন। ফলে ঈদের দিন তাঁর ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে যাওয়াকে অনেকে শুধুমাত্র সৌজন্য সাক্ষাৎ বলে মানতে নারাজ।
এদিকে ফিরহাদ হাকিম বরাবরই দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। অভিষেকের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কও যথেষ্ট ভালো। তবু সাম্প্রতিক কালে তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নানা জল্পনা চলছিল। বিশেষ করে, কলকাতা পুরসভার বেশ কিছু সিদ্ধান্ত এবং অভ্যন্তরীণ সমীকরণ নিয়ে কিছু অসন্তোষের খবর প্রকাশ্যে এসেছে। তাই এই সাক্ষাৎ কি সেই সমস্ত জল্পনা দূর করার একটি কৌশল, নাকি অভ্যন্তরীণ সমন্বয় পুনঃপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা? এ নিয়ে চলছে বিশ্লেষণ।

লোকসভার আগে বার্তা?
এখন প্রশ্ন উঠছে, এই সাক্ষাৎ লোকসভা নির্বাচনের আগে কোনো বিশেষ বার্তা বহন করছে কি না। তৃণমূলের তরফে এটিকে সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ বলেই ব্যাখ্যা করা হচ্ছে, তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঈদের মতো উৎসবের দিনে শীর্ষ নেতৃত্বের এই পদক্ষেপের পেছনে অবশ্যই কৌশল থাকতে পারে।
তবে সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, “এটি একেবারেই সৌজন্য সাক্ষাৎ। প্রতি বছর ঈদের দিন আমার বাড়িতে বহু মানুষ আসেন, দলমত নির্বিশেষে সবাই শুভেচ্ছা জানাতে আসেন। অভিষেকও এসেছিলেন শুভেচ্ছা জানাতে। এর মধ্যে অন্য কোনো অর্থ খোঁজার কিছু নেই।”
অন্যদিকে, বিজেপি নেতারা এই সাক্ষাৎকে কটাক্ষ করে বলেছেন, “তৃণমূলের অন্দরেই বিভাজন স্পষ্ট। লোকসভার আগে দলে ঐক্য বজায় রাখতেই এই ধরনের নাটক করা হচ্ছে।”
সব মিলিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও ফিরহাদ হাকিমের এই সাক্ষাৎ রাজ্য রাজনীতিতে বেশ আলোড়ন তুলেছে। এটি সত্যিই শুধুমাত্র সৌজন্য সাক্ষাৎ, নাকি এর পেছনে রয়েছে গভীর রাজনৈতিক বার্তা? সেই প্রশ্নের উত্তর পেতে অপেক্ষা করতে হবে কিছুদিন।
নিউজ আর্টিকেল তৈরি করা হয়েছে। এটি আরও উন্নত বা সম্পাদনা করার জন্য কিছু পরিবর্তন চাইলে জানান!