“পুজো আসছে…”
এই শব্দদুটি বাঙালির হৃদয়ে যেমন শিহরণ জাগায়, তেমনি এক গভীর নস্টালজিয়ায় ভরিয়ে তোলে মন। একালের থিম-ভিত্তিক মণ্ডপ আর চোখ ধাঁধানো লাইটিং-এর মধ্যে দাঁড়িয়ে অনেকেই হয়তো ভাবে—সেই সেকালের পুজোর আনন্দটা কোথায়?

আজকের পূজোতে প্রযুক্তির ছোঁয়া, ডিজিটাল প্রেজেন্টেশন, আর বহুজাতিক স্পনসরশিপে ভরপুর আয়োজন—সবই আছে, কিন্তু আত্মিক টান, পাড়ার মেলবন্ধন আর নির্ভেজাল আনন্দটা কোথায়?
🕰️ সেকালের পূজো: রীতি, সম্পর্ক, স্মৃতি

- পাড়ায় পাড়ায় ত্রিপল টাঙানো প্যান্ডেল। নিজের হাতে প্যান্ডেল বাঁধা।
- খিচুড়ির গন্ধ, প্যান্ডেলে গল্পের আড্ডা আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সবার অংশগ্রহণ।
- বাড়ির ঠাকুরদালানে ঠাকুর, প্রতিদিনের সন্ধ্যারতি, শাঁখ-উলুধ্বনি আর ঘরোয়া মেজাজ।
🌐 একালের পূজো: ডিজিটাল দুনিয়ার উৎসব

- থিমে থিমে প্রতিযোগিতা, ভিড় ঠেলে সেলফি, ইউটিউব রিলস, ইনস্টাগ্রাম লাইভ।
- কোটি টাকার বাজেট, বিদেশি মডেলের প্রতিমা, আলোর কারিশমা আর কর্পোরেট দাপট।
- স্থানীয়দের অংশগ্রহণ কম, দর্শনার্থীদের ঢল বেশি।
🤔 কী বলছে জনমত?

একাংশ বলছে—”সময় বদলেছে, পূজো বদলাবে।”
আবার কেউ বলছেন—”আড়ম্বর বাড়ছে ঠিকই, কিন্তু পূজোর প্রাণটা যেন হারিয়ে যাচ্ছে।”
🔄 সমাধানের খোঁজে…

- থিম হোক, তবু পাড়ার মানুষজন আবার একসাথে আসুক।
- ছোটদের অংশগ্রহণ বাড়ুক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আবার ফিরুক।
- পূজো হোক হৃদয়ের মিলনমঞ্চ, কেবল দৃশ্যের প্রদর্শনী নয়।
আজকের পূজো বড়, গ্ল্যামারাস এবং ইনস্টাগ্রাম-যোগ্য ঠিকই। কিন্তু সেকালের পূজো ছিল মানুষের, সম্পর্কের, আত্মিক টানের।
আমরা কি পারি না, দুই যুগের সেরা দিকগুলো মিলিয়ে আবার গড়ে তুলতে সেই সত্যিকারের আনন্দময় দুর্গোৎসব?