বাংলা চলচ্চিত্রের মহানায়ক উত্তম কুমার অভিনীত
বিখ্যাত সিনেমা ওগো বধু সুন্দরীর কথা আপনাদের মনে আছে? মনে আছে সেই সিনেমার উত্তম কুমারের
মুখাভিনয়ের সেই গানটি?
এই তো জীবন…. যাক না যেদিকে যেতে চায় প্রান
বেয়ারা, চালাও ফোয়ারা.. জীন শেরী শ্যম্পেন, রাম।
অর্থাৎ আমুদে বাঙালী আজ নয় বরং উত্তম কুমার যুগের অনেক অগে থেকেই সুরা প্রেমী। এক কালে সুরা প্রেমী দের সামাজিক ভাবে বয়কট করা হলেও আজ এটাই অনেকেই পছন্দ করেন। বাঙালীর এই সুরা প্রেম অনেক ঘটনা তথা অনেক বিখ্যাত ব্যাক্তিত্বের পরিচয় ও বহন করে এসেছে। যদিও এক সময় সুরা প্রেমীদের সামাজিক ভাবে বয়কট করা হলেও আজ এটাই হয়ে উঠেছে সামাজিক স্টেটাসের অঙ্গ। মানুষ এখন প্রকাশ্যেই স্বীকার করেন তিনি সুরাপ্রেমী বা আনন্দ অনুষ্ঠানে তিনি সুরা বা মদ পান করে থাকেন। আবার অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে সগর্বে ছবি দিয়েও সেসব কিছুই শেয়ার করেন।। এছাড়া আমরা মাঝে মধ্যেই সংবাদ মাধ্যমেই জানতে পারি রাজ্য সরকার প্রায় প্রতি মাসেই রেকর্ড অঙ্কের আর্থের মদ বিক্রি করে লাভবান হয়েছেন।।
করোনা কালের লকডাউনের পর থেকেই সুরাপ্রেমে বাঙালী হয়ে উঠেছে বেপরোয়া। কারন, এখন আর লুকিয়ে বার বা হোটেলে গিয়ে বেশী টাকা খরচা করে মদ খেতে হয়না। লকডাউনের শিথিলতায় মদ সরাসরি দোকান থেকে কিনে বাড়িতে বসে খাবার স্বাধীনতা তারা ইতিমধ্যেই অর্জন করেছেন।। এবার সেই সব সুরা প্রেমীদের জন্য কলকাতা ভবানীপুরেই খুলে গেল একটি আস্ত মল। কি অবাক হচ্চেন ?
“হেদ্যন্নে”, ঐতিহাসিক গ্রীক দেবী। হেদ্যন্নে” শব্দের অর্থ আনন্দ বা আনন্দের ও পরিতৃপ্তির দেবী। আর এখানে এই মদের বা সুরার মলের নাম হল হেদ্যন্নে”। প্রায় সাড়ে সাত হাজার স্কোয়ার ফুট জুড়ে দুতলা এই মল যেন একেবারেই কাঁচের তৈরী তাজমহল। না এখানে শুধুমাত্র বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের মদ-ই বিক্রি হয়। শুনলে হবাক হবেন, যেসব মদ ভারতে স্বাভাবিক ভাবে বিক্রি হয়না সেই সব নামী দামী মদ আপনি পেয়ে যাবেন এই “হেদ্যন্নে” এলে। তাও আবার একেবারেই ন্যায্য মূল্যে। কোন রকম লুকানো কোন মূল্য প্রদান করতে হয়না। তবে এর থেকে এটা খুব সহজেই অনুমান করা যায় যে বদলে গেছে আমাদের শহর কলকাতা, বদলেছে বাঙালী। সমাজের অর্থনৈতিক অবস্থানের উন্নয়ন সহজেই পরিলক্ষিত।
লকডাউনের প্রায় আগে থেকেই এই উদ্যোগের ভাবনা শুরু করেন বিকাশ মুসাদ্দি, ময়ঙ্ক শ্রফ, অনন্ত শ্রফ, বিকাশ মুরারকা ও অনুরাগ মুরারকা। আবগারী দফতরের নানাবিধ আইনি পদ্ধতি মেনে শুরু করতে লেগে যায় কয়েকটি বছর। মাত্র তিন মাস সম্পুর্ন হল হেদ্যন্নে-র।
হেদ্যন্নে-র অন্যতম কর্ণধার ময়ঙ্ক শ্রফ জানান – প্রাপ্তবয়স্ক সুরা প্রেমী মানুষদের সুরা বা মদ কিনতে কোন লজ্জা জনক পরিবেশে যেতে হবে না। যেখানে গেলে নিজেকে অপরাধী বলে মনে হয়। বিশেষ করে মহিলা সুরা প্রেমীরা এখানে যথেষ্ট নিরাপদ ঠিক যেভাবে তারা পারফিউম কিনতে গিয়ে নানান সুগন্ধি পরখ করে কিনতে পারেন ঠিক এখানেও মহিলা ও পুরুষ সুরা প্রেমীরা গর্বের সাথে সুরা সংগ্রহ করতে পারবেন।
অন্যদিকে হেদ্যন্নে-র আরো এক কর্নধার অনন্ত শ্রফ জানান, কলকাতার মতো অভিজাত শহরে মহিলা সুরা প্রেমীদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে কিন্তু মহিলাদের কে সঠিক ভাবে সুরা পরিবেশনের কোন সঠিক ব্যাবস্থা ছিলনা। হেদ্যন্নে সেখানে প্রথম উদ্যোগ। ঠিক যেভাবে কলকাতা শহরে প্রথম মেট্রোরেল ঠিক তেমনই।
কর্নধার অনুরাগ মুরারকা জানান – যে সব মানুষরা সুরা ও সুরা সম্পর্কিত তৃপ্তি লাভ করতে চান তাদের কাছে হেদ্যন্নে হয়ে উঠবে একমাত্র ঠিকানা।