২০২৬-র বিধানসভা ভোটের আগেই রাজ্য রাজনীতিতে বড়সড় চমক দিলেন তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। ঘোষণা করলেন পৃথক রাজনৈতিক দল গঠনের সিদ্ধান্ত। মুর্শিদাবাদ জেলার জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি জানালেন, ১৫ আগস্টের পরই আত্মপ্রকাশ করবে তাঁর নতুন দল।
ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর দীর্ঘদিন ধরেই মুর্শিদাবাদ জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে আসছিলেন। এবার সেই ক্ষোভই রূপ নিতে চলেছে নতুন রাজনৈতিক শক্তিতে। তাঁর অভিযোগ, জেলা নেতৃত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ অমান্য করছে এবং যোগ্য নেতা-কর্মীদের গুরুত্ব না দিয়ে ‘ছাগল দিয়ে ধান মাড়ানো’ হচ্ছে।
একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে হুমায়ুন কবীর বলেন,
“দল করে প্রমাণ করতে চাই, চাষ বলদ দিয়েই হয়, ছাগল দিয়ে না। এবার দেখা যাবে, বলদের পক্ষে মানুষ, না ছাগলের পক্ষে।”
তিনি জানান, তাঁর নতুন দল কেবল মুর্শিদাবাদে সীমাবদ্ধ থাকবে না। মালদহ, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর ও নদিয়ার অংশ মিলিয়ে অন্তত ৫০-৫২টি আসনে প্রার্থী দেবে এই দল। অর্থাৎ, উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের সংযোগস্থলে একটি উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক বলয়ে প্রভাব বিস্তার করতে চাইছেন হুমায়ুন।
তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তাঁর কোনও ক্ষোভ নেই বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন তিনি। বলেন,
“ক্ষমতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই আসবেন। তিনিই আগামী মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু জেলা নেতৃত্বের অপদার্থতা বন্ধ করতে আমি বাধ্য হয়েছি।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্কে এই ঘটনার প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষত উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহ এবং মুর্শিদাবাদে যেখানে হুমায়ুনের ভাল সংগঠন রয়েছে।
দলবিরোধী মন্তব্যের জেরে ইতিমধ্যেই একাধিকবার সতর্ক করা হয়েছিল হুমায়ুন কবীরকে। এমনকি তাঁর সাসপেনশনের সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছিল। এখন প্রশ্ন, নতুন দল গঠনের এই ঘোষণার পর তৃণমূল কংগ্রেস কী প্রতিক্রিয়া জানায়?
আগামী বিধানসভা ভোটের আগে এই পদক্ষেপ রাজ্যের রাজনৈতিক মানচিত্রে কতটা প্রভাব ফেলবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।