সম্প্রতি রাজ্যে উত্তাল বিতর্ক তৈরি হয়েছে অভিনেতা ও তৃণমূল বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক-কে ঘিরে। অভিযোগ, তিনি এক সরকারি চিকিৎসককে ফোনে হুমকি দিয়েছেন। এই ইস্যুতে রাজ্য রাজনীতিতে জলঘোলা হলেও, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার দাবি করেছেন—
“এতে কোনও অপরাধ দেখছি না”।
তিনি দিয়েছেন তাঁর নিজস্ব ব্যাখ্যা, যা নিয়ে আরও বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
সুকান্ত মজুমদারের অবস্থান: কেন তিনি ‘অপরাধ’ দেখছেন না?
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে বলেন, “কাঞ্চন মল্লিক যদি কোনও অনৈতিক কাজ করেও থাকেন, সেটা প্রমাণ করতে হবে। শুধু ফোন রেকর্ডের ভিত্তিতে কাউকে দোষী বলা যায় না।” তিনি আরও বলেন, “যদি কাঞ্চন কাউকে ফোনে কিছু বলেন, তাও প্রমাণযোগ্য হতে হবে। একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির সম্মান থাকা উচিত।”
এই বক্তব্যে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে—কোনও সাধারণ নাগরিক যদি একই কাজ করতেন, তাহলে কি একই ধরণের বক্তব্য আসত?

চিকিৎসকদের প্রতিক্রিয়া: পেশার মর্যাদায় আঘাত?
ঘটনার পর, চিকিৎসক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। একাধিক চিকিৎসক সংগঠন অভিযোগ তুলেছে, একজন জনপ্রতিনিধি যদি এভাবে পেশাগত কাজে বাধা দেন ও হুমকি দেন, তবে তা গণতান্ত্রিক ও পেশাগত শিষ্টাচার পরিপন্থী।
চিকিৎসকদের মতে, এই ধরনের ঘটনা যদি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না পায়, তবে ভবিষ্যতে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। পশ্চিমবঙ্গ মেডিক্যাল কাউন্সিল থেকেও দ্রুত তদন্তের দাবি উঠেছে।

রাজনীতির রঙে ঢেকে যাচ্ছে প্রশাসনিক ন্যায়?
এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করল, রাজ্যে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে নৈতিকতার প্রশ্নে দ্বিমত স্পষ্ট। বিজেপি রাজ্য সভাপতি কাঞ্চনের দিকে সাফাই দেওয়া প্রসঙ্গে তৃণমূল ও অন্যান্য বিরোধী দল প্রশ্ন তুলেছে—
“জনপ্রতিনিধি কি আইনের ঊর্ধ্বে?”
অন্যদিকে, বিজেপি-র বক্তব্য—তাদের অবস্থান ন্যায়বিচার ও তদন্ত-নির্ভর। তারা এই ঘটনাকে পুরোপুরি রাজনীতিকরণ বলে ব্যাখ্যা করেছে।
উপসংহার: নৈতিকতা না রাজনৈতিক দায়?
কাঞ্চন মল্লিকের বিরুদ্ধে চিকিৎসককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ যে গুরুতর, তা অস্বীকার করার জায়গা নেই। কিন্তু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের মুখে যখন এই বিষয়ে সাফাই শোনা যায়, তখন সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন ওঠে—আইন কি সকলের জন্য সমান? নাকি রাজনৈতিক পরিচয় অনুযায়ী তার ব্যাখ্যা পাল্টে যায়?
এই বিতর্কে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, চিকিৎসক ও নাগরিকদের নিরাপত্তা এবং পেশাগত মর্যাদা রক্ষা করা। তদন্ত স্বচ্ছভাবে হোক, এবং দোষী প্রমাণিত হলে উপযুক্ত শাস্তি হোক—এইটুকুই এখন সময়ের দাবি।
📢 আপনার মতামত জানান: আপনি কি মনে করেন জনপ্রতিনিধিরা এই ধরনের আচরণ করলে কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত? মন্তব্যে জানান অথবা শেয়ার করুন আপনার মতামত।