কলকাতার দক্ষিণ অংশের এক নামী আইন কলেজে এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত-সহ তিন জনকে আগামী ৮ জুলাই পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আলিপুর আদালত। অভিযুক্তদের মধ্যে এক জন কলেজের প্রাক্তনী ও অস্থায়ী কর্মী, বাকি দু’জন এখনও ছাত্র। ঘটনায় জড়িত রক্ষীকেও শুক্রবার (৪ জুলাই) পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখা হবে।
ঘটনার গুরুত্ব ও বিতর্ক বাড়তেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিল কলেজ কর্তৃপক্ষ। চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে মূল অভিযুক্ত কর্মী ‘এম’কে। তাঁকে চাকরির মেয়াদে পাওয়া সমস্ত অর্থ ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অভিযুক্ত ছাত্রদের বহিষ্কার করা হয়েছে, এবং এদের অন্য কোনও কলেজে ভর্তি হতে না দেওয়া নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও সিদ্ধান্ত হয়েছে।

কী ঘটেছিল?
অভিযোগ, গত বুধবার রাতে প্রথমে কলেজের ইউনিয়ন রুমে ছাত্রীটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। পরে তাঁকে একটি কক্ষে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়। সেই সময় কলেজের রক্ষীকে বাইরে বসিয়ে রাখা হয়েছিল। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ বৃহস্পতিবারই মূল অভিযুক্ত-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করে।

সামাজিক গোপনীয়তা ভঙ্গের আশঙ্কা:
ঘটনার জেরে কলকাতা পুলিশ একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছে সমাজমাধ্যমে। নির্যাতিতার নাম ও পরিচয় প্রকাশ করার চেষ্টার বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। লালবাজার জানিয়েছে, এই ধরনের আচরণ আইনের পরিপন্থী এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

কলেজের পদক্ষেপ:
কলেজ পরিচালন সমিতি একাধিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে—
- অভিযুক্ত কর্মীর চাকরিচ্যুতি
- প্রাপ্ত অর্থ ফেরতের নির্দেশ
- অভিযুক্ত ছাত্রদের বহিষ্কার
- ছাত্রীটির চিকিৎসার খরচ বহনের অঙ্গীকার
- ভবিষ্যতে প্রাক্তনীদের প্রবেশে বিধিনিষেধ
প্রাক্তনদের আমন্ত্রণ সংক্রান্ত হাই কোর্টের পুরনো নির্দেশকে সামনে রেখে কলেজ ছাত্র সংসদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, পাশ করার পরে পাঁচ বছরের মধ্যে কোনও প্রাক্তনীকে আমন্ত্রণ জানানো হবে না।
🪧 বিজেপির প্রতিবাদ মিছিল:
এই ঘটনার প্রতিবাদে বিজেপির যুব মোর্চা মিছিলের অনুমতি চেয়েছিল। রাজ্য প্রশাসনের আপত্তির পর হাই কোর্ট ৩,০০০ জনের সীমায় মিছিলের অনুমতি দেয়। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের নির্দেশ অনুযায়ী, সব শর্ত মেনে বুধবার মিছিল করতে হবে। শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিত থাকার কথা।