যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এবার শান্তির রথ! কলকাতার ইসকনের ৫৪তম রথযাত্রা এক ঐতিহাসিক বার্তা
তারক হরি,বিশেষ প্রতিবেদন:
“রথ টানলে আসে দুর্গা”—এই বাংলার প্রবাদবাক্য আজও জীবন্ত। তবে এবারের রথযাত্রা শুধু ধর্মীয় আবেগে ভরপুর নয়, বরং বিশ্ব পরিস্থিতির আবহে এক মানবিক আবেদন হয়ে উঠেছে। কলকাতার ইসকনের ৫৪তম রথযাত্রা এ বছর শান্তির বার্তা নিয়ে হাজির।
পাক-ভারত সংঘর্ষের ছায়ায় শান্তির বার্তা
যেখানে সাম্প্রতিককালে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে, যুদ্ধবিমানের ঝাঁজে গর্জে উঠেছে দুই দেশের পরিস্থিতি, ঠিক সেই প্রেক্ষাপটে কলকাতার বুকে শুরু হতে চলেছে ইসকনের রথযাত্রা—যার মূল প্রতিপাদ্য ‘বিশ্বশান্তি ও মানবতা’।

ইসকনের মহারাজরা জানিয়েছেন, “এই রথযাত্রা শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি হোক একাত্মতার, ঐক্যের, এবং শান্তির বার্তা পৌঁছে দেওয়ার এক পবিত্র উপলক্ষ।”
বিমানের আদলে রথ! শান্তির প্রতীক হয়ে উঠছে ধর্মীয় আয়োজন
এবারের রথযাত্রায় এক অভিনব চমক—রথ তৈরি হয়েছে বোয়িং ৭৪৭ যুদ্ধবিমানের আদলে! প্রতীকীভাবেই বোঝাতে চাওয়া হয়েছে, যেখানে যুদ্ধবিমান ধ্বংসের প্রতীক, সেখানেই এই রথ হবে শান্তির বাহক।

এই অভিনব রথেই চড়ে আগমন করবেন জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা। কলকাতার রাজপথে চলবে সেই রথ, বহন করবে শান্তির বার্তা।
📍রথযাত্রার রুট ও সময়সূচি
২৭ শে জুন, দুপুর ১টা থেকে
📍 রুট: হাঙ্গারফোর্ড স্ট্রিট ➝ চৌরঙ্গী মোড় ➝ এক্সাইড ➝ আউট্রাম ঘাট
শতাধিক কীর্তন দলের অংশগ্রহণ এবং হাজার হাজার ভক্তের উপস্থিতিতে এই রথযাত্রা হয়ে উঠবে এক মহোৎসব।
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে এক ঐতিহাসিক রীতি – ১৯৬৭ সালে প্রথম আমেরিকার সানফ্রান্সিসকোতে ইসকনের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল আন্তর্জাতিক রথযাত্রা। আজ বিশ্বজুড়ে ১৫০টিরও বেশি শহরে পালিত হচ্ছে এই রথযাত্রা উৎসব। কলকাতার রথ এবার সেই আন্তর্জাতিক বার্তাকেই আরও জোরালোভাবে তুলে ধরছে।
ইসকনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে—
“এ বছর আমরা চাই, রথযাত্রা হোক মানবিকতা, সমবেদনা এবং শান্তির মেলবন্ধনের প্রতীক। বিভাজনের নয়, মিলনের রথ হোক এটি।”
এই ধর্মীয় উৎসব এবার হয়ে উঠুক এক মানবতার রথ, যেখানে ভগবানকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠবে সহমর্মিতার সমাজ, শান্তির পৃথিবী।