বারাসত আদালতের নির্দেশে নিষিদ্ধ হল প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক এবং অবসরপ্রাপ্ত আইএএস আধিকারিক দীপক ঘোষের লেখা এক বিতর্কিত বই, যেখানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার ও রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সুদর্শন ঘোষ দস্তিদারকে নিয়ে অমাননাকর মন্তব্য রয়েছে বলে অভিযোগ।

মঙ্গলবার বারাসত ফার্স্ট কোর্টের সিভিল জজ (জুনিয়র ডিভিশন) মানহানির মামলার শুনানিতে বইটির প্রকাশনা, বিক্রয়, বিতরণ এবং প্রচারের উপর অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। মামলাটি দায়ের করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। আদালত জানিয়েছে, ১৭ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বা নতুন নির্দেশ না আসা পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে।
সাংসদ কাকলির পুত্র বৈদ্যনাথ ঘোষ দস্তিদার জানান, “বইটিতে আমার মা ও বাবার সম্পর্কেও অপমানজনক মন্তব্য রয়েছে। আমরা এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছি। আলিপুর ও বারাসত—দুটি আদালতেই মামলা করা হয়েছে।” পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, এই বইয়ের প্রকাশক ও পরিবেশকের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং তারা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবেন।

প্রসঙ্গত, দীপক ঘোষ নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে রাজ্য প্রশাসন থেকে অবসর নিয়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন এবং মহিষাদল কেন্দ্র থেকে বিধায়ক হয়েছিলেন। পরে তিনি যাদবপুর এবং মেদিনীপুরে ভোটে লড়লেও পরাজিত হন এবং ক্রমে তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়। ওই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবন ও রাজনীতি নিয়ে লেখা তাঁর বই ঘিরে রাজনৈতিক মহলে উত্তাল বিতর্কের সৃষ্টি হয়।
মুকুল রায় সেই সময় দীপকের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছিলেন, যা এখনও নিষ্পত্তির অপেক্ষায়। বিরোধী শিবিরের একাধিক নেতা বারবার সেই বই উদ্ধৃত করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন।
এই রায়ের মাধ্যমে আইনি স্তরে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হল বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।