ডেস্ক রিপোর্ট, The Indian Chronicles
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম জগতে বিপ্লব এনেছে মেটা (Meta)। তবে সম্প্রতি কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য আয়ের সুযোগ কমিয়ে দেওয়ায় হতাশা নেমে এসেছে এই ইন্ডাস্ট্রিতে। ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম প্ল্যাটফর্মে মনিটাইজেশনের কড়াকড়ি এবং ইনসেনটিভ প্রোগ্রামের সীমিতকরণ কন্টেন্ট নির্মাতাদের সামনে কঠিন বাস্তবতা দাঁড় করিয়েছে।

কেন কমছে মেটার মনিটাইজেশন সুবিধা?
বিগত বছরগুলোতে মেটা ক্রিয়েটরদের জন্য বিভিন্ন ইনসেনটিভ এবং বোনাস প্রোগ্রাম চালু করেছিল। বিশেষ করে Facebook Reels Play Bonus এবং Instagram Reels Bonus Program-এর মাধ্যমে ক্রিয়েটররা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতেন। কিন্তু সম্প্রতি মেটা তাদের ফোকাস পরিবর্তন করে বিজ্ঞাপনভিত্তিক মডেলে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে।
এর কারণ হিসেবে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন:
- মুনাফা পুনর্বিন্যাস: মেটা এখন AI ও মেটাভার্স প্রযুক্তিতে বিপুল বিনিয়োগ করছে, তাই মনিটাইজেশনে কাটছাঁট করছে।
- বিজ্ঞাপনী রাজস্বের পরিবর্তন: বিজ্ঞাপনদাতারা সরাসরি ব্র্যান্ডেড কন্টেন্টে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী, যা প্ল্যাটফর্মের নিজস্ব ইনসেনটিভ প্রোগ্রামের গুরুত্ব কমিয়ে দিয়েছে।
- TikTok প্রতিযোগিতা: মেটা রিলসের প্রসারে শুরুতে বড় অঙ্কের ইনসেনটিভ দিলেও এখন এই মডেল টেকসই মনে করছে না

বাংলাদেশ ও ভারতের ক্রিয়েটররা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশের এবং ভারতের কন্টেন্ট ক্রিয়েটররাও মেটার এই নীতিগত পরিবর্তনে বিপাকে পড়েছেন। অনেকেই জানিয়েছেন, রিলসের জন্য আগের মতো বোনাস পাওয়া যাচ্ছে না, যা তাদের আয়ের বড় একটি উৎস ছিল।
ভারতের এক জনপ্রিয় ডিজিটাল ক্রিয়েটর বলেছেন,
“পূর্বে আমি শুধু ইনস্টাগ্রাম রিলস থেকেই মাসে কয়েক লাখ টাকা আয় করতাম। এখন সেই পরিমাণ অর্ধেকে নেমে এসেছে।”
বাংলাদেশের এক ফেসবুক ইনফ্লুয়েন্সার বলেন,
“মনিটাইজেশন এত কঠিন হয়ে গেছে যে এখন ক্রিয়েটরদের বিকল্প পথ খুঁজতে হবে।”

পরবর্তী করণীয় কী?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের এখন বিকল্প আয়ের উৎস তৈরি করতে হবে। যেমন—
ব্র্যান্ডেড কন্টেন্ট ও স্পনসরশিপ: সরাসরি ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তি করা।
YouTube মনিটাইজেশন: ইউটিউবের বিজ্ঞাপন রাজস্ব এখনো লাভজনক।
TikTok ও অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে শিফট: অনেকেই এখন TikTok, Kwai ও অন্যান্য নতুন প্ল্যাটফর্মে যাচ্ছেন।
সাবস্ক্রিপশন ও মেম্বারশিপ: Patreon, Ko-fi, এবং ফেসবুক সাবস্ক্রিপশন ফিচার কাজে লাগানো।
শেষ কথা
মেটার এই নতুন নীতির ফলে কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। যারা শুধুমাত্র ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে নির্ভরশীল ছিলেন, তাদের জন্য সময় এসেছে নতুন কৌশল গ্রহণের। তবে ডিজিটাল মার্কেটিং ও ভিডিও কন্টেন্টের গুরুত্ব যেহেতু দিন দিন বাড়ছে, তাই কন্টেন্ট নির্মাতারা দ্রুত নতুন দিকনির্দেশনা খুঁজে নিতে পারলেই এই সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।
আপনার মতামত কী? মেটার এই সিদ্ধান্ত কি কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য ভালো না খারাপ? কমেন্টে জানান!