আমাদের বাঙালিদের সব মরশুমের জন্য বঙ্গ জীবনের অঙ্গ – বোরোলিন। সুরভীত অ্যান্টিসেপ্টিক ক্রীম -বোরোলীন।
বাংলার আবাল বৃদ্ধ বনিতার ভীষন পরিচিত ও প্রিয় এই বোরোলিন আপনি ত্বকের যেকোন সমস্যায় ব্যাবহার করতে পারবেন। কেটে ছড়ে যাওয়া, ত্বকের রুক্ষতা বা সামান্য ছ্যাঁকা লাগলে একটু খানি বোরোলীন, ব্যাস সমস্যা নিরাময় এক নিমেষে।
ঠিক এই বোরোলিনের মতোই, বঙ্গ জীবনের অঙ্গের মতোই আছে দুটি “অপবাদ”। আপনি আপনার প্রতিপক্ষ কে চুপ করাতে বা থামিয়ে দিতে, আপনার প্রতিপক্ষের চরিত্রে আলতো করে লাগিয়ে দিন এই দুটি “অপবাদ”-এর একটি বা ভালো ফল পেতে দুটোই লাগাতে পারেন। একটি হল অর্থনৈতিক অপবাদ আর একটি হল নারী ঘটিত অপবাদ। এক নিমেষে সমস্যার সমাধান। বহু বড় বড় রাজনৈতিক ক্ষমতা সম্পন্ন নেতারাও এই অপবাদে ঘায়েল হয়েছেন বহুবার সে কথা তো আমরা হামেশাই সংবাদ মাধ্যমেই দেখতে পাই। আসলে এই অপবাদ গুলি দিলে, এগুলি কতটা মিথ্যা তা প্রমান করার পরেও এর সুরভিত সৌরভ থেকে যায় জনগনের মুখে মুখে।
ঠিক যেভাবে কুনাল ঘোষ কে সারদা কেলেঙ্কারিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই লিখিত ভাবে বলেছিল এই অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারি বিষয়কে সামনে আনার জন্য তিনিই প্রচেষ্টা করেছিলেন। সিবিআই বললেও আজ এই রাজ্যের বহু জনগন ও বিরোধী দলের নেতারা তাকেই দায়ী করে আসছেন। মহামান্য আদালতে দেওয়া সিবিআই এর কাগজ সেখানে মূল্যহীন।
Mrs Chatterjee Vs Norway চলচ্চিত্র নিয়ে, আসল তথ্য প্রকাশ্যে আনার দায়ে রাজীব সরকারকে “আবারও” প্রতিহত করতে রিয়েল লাইফ “Mrs Chatterjee” -র “মা” শিখা চক্রবর্তী এরকমই অভিযোগ আনলেন এক প্রথম শ্রেনীর সংবাদ মাধ্যমের কাছে। সাগরিকার মা শিখা চক্রবর্তী দাবী করে বলেছেন – ” রাজীব সরকার এই শিশু উদ্ধার করার জন্য অর্থের দাবী করেছিলেন আর সেই কারনেই ওনারা রাজীব সরকার কে এই ঘটনা থেকে বাদ দিয়েছেন। “
অথচ অদ্ভুত বিষয় হল, এই দুটি শিশু উদ্ধার কান্ডের যাবতীয় সরকারী এবং কেন্দ্রীয় সরকারের কাগজে ছিল রাজীব সরকারের নাম, অশোক স্থম্ভের শীল মোহোর যুক্ত। আবার নরওয়ে সরকারও সরাসরিভাবে রাজীব সরকারকে ইমেলের পর ইমেল লিখছেন৷ আরো মজার কথা কলকাতার নরওয়ে কনসুলেটে যখন সাগরিকার পরিবার মিটিং করছে, তখন সেই বৈঠকে রাজীব সরকার উপস্থিত। অদ্ভুত বিষয়, তাই না?
অন্যদিকে শিশু উদ্ধার হবার পর, রাজীব সরকার অনুরুপের বাড়িতে গিয়ে শিশুদুটির সাথে দেখা করেন। রাজীব সরকারের কোলে শিশুদুটির ছবিও রয়েছে। সঙ্গে স্থানীয় এক পুলিশ কর্তা। এই পুলিশ কর্তা সেই ব্যক্তি যে আবার কিনা রাজীব সরকারকে ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে ২০১৭ সালে গ্রেফতার করে ১৬ মাস জেল বন্দি এবং আরো ১৭ মাস গৃহ বন্দি করে রাখেন। সে সব আরেক কাহিনি।
এই সময় কোলকাতার প্রথম সারীর সংবাদে রাজীব সরকারের বিরুদ্ধে শিখা চক্রবর্তীর আনা অভিযোগের বিষয়ে নরওয়ে তে অনুরুপ ভট্টাচার্যের সাথে যোগাযোগ করলে তিনিও আজ অবাক হয়ে বলেন – “আর কিছু বলার নেই”!
নরওয়ে থেকে শিশুদুটি উদ্ধারের সঙ্গে যুক্ত কলকাতার আরও একজন সমাজকর্মী ( যার হাত ধরে সাগরিকা গিয়েছিলেন মাননীয়া মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কালিঘাটের বাড়িতে ) অন্তরা সোম বাসু রাজীব সরকারের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অভিযোগের কথা শুনেই খুব অবাক এবং আশঙ্কিত হয়ে বলেন – “আজ যদি সাগরিকার পরিবার অকৃতজ্ঞের মতো রাজীবের নামে এতবড় অভিযোগ আনতে পারেন, তাহলে আগামীকাল হয়তো আমাকে নিয়ে আরো খারাপ কোন অপবাদ দেবেন। সাগরিকার পরিবারের সততা নিয়ে আমারতো আরো আশঙ্কা বাড়ছে” তাই এ নিয়ে আর রাজীবের আর আমার কোন কথাই বলা উচিত না। এবার এদেরই বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল”।
রাজীব সরকারের কাছে শিখা চক্রবর্তীর আনা অভিযোগের কথা বলতেই তিনি হেসে আমাদের একটি ই-মেলের কপি দেখান, যা অনুরুপ ভট্টাচার্য্য লিখে ছিলেন ২৯শে মে ২০১২ তে মাননীয়া মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে। বিস্ফোরোক সেই ই-মেল এর কপিতে রয়েছে সাগরিকা চক্রবর্তী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে ভয়ানক একাধিক অভিযোগ সহ এমন কিছু তথ্য যা প্রকাশ্যে এলে শুধু যে সিনেমার বিষয় বস্তু বদলে যাবে তাই নয়, অনেকেই জ্ঞান হারাতে পারেন।
আমরা রাজীব সরকারের কাছে সেই ই-মেলের প্রত্যায়িত চাইলে এবং প্রকাশ্যে আনার কথা বললে তিনি হাত জোড় করে না বলে দেন। তিনি বলেন “এই মেলের বিষয় বস্তু প্রকাশ্যে এলে হয়তো আমি মহান হয়ে যেতে পারি কিন্তু ওই “শিশুদুটির” ভবিষ্যৎ নষ্ট হবার সম্ভাবনা প্রবল হবে যা আমি চাইনা। আমি কলঙ্কিত আগেই ছিলাম। এ নতুন কিছুনা। আমি শুধু চেয়েছিলাম প্রকৃত সত্য ঘটনাটি সামনে আসুক। এ লড়াই শুধুমাত্র সাগরিকার একার ছিল না। এ লড়াই ছিল দেশের সকল জনগনের”।
আগামী দিনে Mrs Chatterjee Vs Norway নিয়ে আবার কোন নতুন তথ্য আসবে কিনা আমাদের জানা নেই, তবে এই ঘটনায় যে রাজীব সরকার প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত ছিলেন এবং সিনেমা থেকে সেই সব কিছু জেনেশুনে বাদ রাখা হয়েছে তা আক্ষরিক অর্থে স্বীকার করেই ফেললেন সাগরিকার মা শিখা চক্রবর্তী। কারণ সরকারি কাগজ কথা বলে, শিখা চক্রবর্তী বা কারোর হাওয়া উড়িয়ে দেওয়া কথা কিছু প্রমাণ করে না৷ অবাক বিষয় এত অসম্মান, অপমানের পরও অনুরুপের ইমেলের কপি কিছুতেই কোনও সাংবাদিকদের দিলেন না রাজীব সরকার। কলঙ্কিত হয়ে রইলেন নরওয়ে থেকে ফেরা, সেই দুটি শিশুর জন্যে।