আজ, ১ জুলাই — গোটা ভারত জুড়ে পালিত হচ্ছে জাতীয় চিকিৎসক দিবস। এই দিনটি শুধুই চিকিৎসকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর দিন নয়, এটি পশ্চিমবঙ্গের গর্ব ডাঃ বিধান চন্দ্র রায়-এর জন্ম ও মৃত্যুদিন। তিনি ছিলেন চিকিৎসা ও রাজনীতির যুগপৎ নায়ক — যাঁর অবদান আজও বাংলার অবকাঠামো এবং মানুষের চেতনায় গেঁথে রয়েছে।

১৮৮২ সালের ১ জুলাই বিহারের বাঁকিপুরে জন্মগ্রহণ করেন ডাঃ রায়। অক্লান্ত অধ্যবসায়ে তিনি ইংল্যান্ডের সেন্ট বার্থোলোমিউ’স হাসপাতাল থেকে এমআরসিপি ও এফআরসিএস ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে দেশে ফিরে আসেন চিকিৎসাসেবায় আত্মনিয়োগ করতে এবং ধীরে ধীরে যুক্ত হন স্বাধীনতা সংগ্রামের স্রোতে।

স্বাধীনতার পর, ১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৬২ পর্যন্ত টানা ১৪ বছর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তাঁর হাত ধরেই গড়ে উঠেছিল বিধাননগর (সল্টলেক), দুর্গাপুর, কল্যাণী, আশোকনগর-সহ একাধিক পরিকল্পিত শহর। তিনি শুধু চিকিৎসক নন, ছিলেন এক নির্মাতা – যিনি চিকিৎসার পরিকাঠামো থেকে শুরু করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিল্পাঞ্চলের জন্ম দিয়েছিলেন।

আধুনিক চিকিৎসার পথপ্রদর্শক
ডাঃ রায় প্রতিষ্ঠা করেন—
- কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে পোস্টগ্র্যাজুয়েট বিভাগ
- চিত্তরঞ্জন ক্যান্সার হাসপাতাল
- বেলেঘাটা সংক্রামক রোগ হাসপাতাল
- মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র
তাঁরই প্রেরণায় গঠিত হয় Indian Medical Association ও Medical Council of India।

জাতীয় চিকিৎসক দিবস কেন ১ জুলাই?
ডাঃ রায়ের জন্ম ও মৃত্যু, দুই-ই হয় ১ জুলাই তারিখে। তাঁর স্মৃতিকে সম্মান জানাতে ভারত সরকার ১৯৯১ সালে এই দিনটিকে জাতীয় চিকিৎসক দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।
২০২৫ সালের থিম: “Behind the Mask: Who Heals the Healers?” – যা চিকিৎসকদের মানসিক ও আবেগগত চাহিদার প্রতি সচেতনতা বাড়াতে আহ্বান জানায়।
🏅 তাঁর সম্মান ও উত্তরাধিকার
- ১৯৬১ সালে তাঁকে ভারতরত্ন প্রদান করা হয়।
- ১৯৬২ সালে তাঁর নামেই চালু হয় Dr. B. C. Roy National Award — যা চিকিৎসা, সাহিত্য, সমাজসেবা সহ বহু ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য দেওয়া হয়।