📰 মূল প্রতিবেদন
অনুব্রত মণ্ডলের ভাইরাল অডিও ক্লিপ ঘিরে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। এবার এই ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ করল জাতীয় মহিলা কমিশন (NCW / National Commission for Women)। বীরভূম জেলা পুলিশের তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে সরাসরি জেলার পুলিশ সুপার (SP) অমনদীপ সিংকে দিল্লিতে হাজিরা দিতে তলব করল কমিশন।
কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ১ জুলাইয়ের মধ্যে তাঁকে দিল্লিতে কমিশনের দপ্তরে উপস্থিত থাকতে হবে এবং সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে সমস্ত প্রয়োজনীয় তদন্ত-সংক্রান্ত কাগজপত্র।
🎙 কী ঘটেছিল?
সম্প্রতি এক অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয় যেখানে এক প্রভাবশালী ব্যক্তি (অভিযোগ অনুযায়ী অনুব্রত মণ্ডল) বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারকে অবমাননাকর ভাষায় হুমকি দিচ্ছেন। শুধু হুমকি নয়, আইসির স্ত্রী ও পরিবারের মহিলাদের বিরুদ্ধেও অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করা হয়।

এই অডিও সামনে আসার পর ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয় রাজনৈতিক মহলে। প্রশ্ন ওঠে, কীভাবে একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি খোদ এক পুলিশ আধিকারিককে এমনভাবে হুমকি দিতে পারেন এবং এরপরও পুলিশের পদক্ষেপ এত ঢিলেঢালা হয়?
⚖️ তদন্তে অসন্তোষ NCW-এর
বীরভূম পুলিশ ঘটনার পর অনুব্রতর বিরুদ্ধে ৪টি ধারায় মামলা রুজু করলেও, জাতীয় মহিলা কমিশনের দাবি অনুযায়ী তদন্ত যথাযথ হয়নি।
কমিশনের অভিযোগ:
- FIR যথাসময়ে আপলোড হয়নি
- কোনো ভিডিওগ্রাফি বা মেডিক্যাল রিপোর্ট কমিশনের কাছে পৌঁছায়নি
- ফোন জব্দ সংক্রান্ত কোনও তথ্য নেই
- মামলা সংক্রান্ত সম্পূর্ণ কেস ডায়েরি জমা দেওয়া হয়নি
এই কারণেই বীরভূম পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলেছে কমিশন এবং সরাসরি এসপিকে তলব করেছে।
📩 কী বলেছে কমিশন?
কমিশন জানিয়েছে, ‘‘যথাযথ তদন্ত না হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
চিঠিতে বলা হয়েছে, ১ জুলাইয়ের মধ্যে হাজির না হলে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে, এবং বীরভূমের পুলিশ সুপারকে দায়িত্বশীলভাবে সমস্ত তথ্য সহ হাজির থাকতে হবে।
কমিশনের আরও নির্দেশ, যে সমস্ত নথি সঙ্গে আনতে হবে:
- FIR এর পূর্ণ কপি
- জব্দ হওয়া ডিভাইসের বিবরণ
- অভিযুক্ত ও ভুক্তভোগীদের মেডিক্যাল রিপোর্ট
- ভিডিওগ্রাফিক প্রমাণ
- কেস ডায়েরি ও তদন্তের সব স্টেটাস আপডেট
🔍 রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনার পর বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছে, “যদি একজন পুলিশ অফিসারকেই সুরক্ষা দেওয়া না যায়, তাহলে সাধারণ মানুষের কী হবে?”
বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের দাবি, “অনুব্রত মণ্ডলের মতো তৃণমূল নেতাদের রক্ষা করতে পুলিশও পক্ষপাতদুষ্ট ভূমিকা নিচ্ছে।”
তৃণমূলের পক্ষ থেকে এখনও কোনও অফিসিয়াল প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে ঘরোয়া সূত্রে জানা যাচ্ছে, দলের অন্দরে এই ঘটনা নিয়ে চাপা উত্তেজনা রয়েছে।