প্রতিবেদন: দ্য ইন্ডিয়ান ক্রনিকলস ডেস্ক
প্রকাশকাল: ১১ জুলাই ২০২৫
ওড়িশা, রায়গড়:
বিবাহ শুধুই ভালোবাসার পরিণতি নয়, অনেক সময় তা হয়ে ওঠে শাস্তির কারণ — এমনই এক ভয়ানক ঘটনা সামনে এল ওড়িশার রায়গড়া জেলায়। প্রেম করে বিয়ে করায় এক নবদম্পতিকে ‘শাস্তি’ হিসেবে দেওয়া হল জোয়াল কাঁধে চাষ করার দণ্ড! ঘটনাটির ভিডিও ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে, যার দৃশ্য দেখে শিউরে উঠছেন নেটিজেনরা।
ঘটনাটি ঘটেছে রায়গড়ার একটি প্রত্যন্ত গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গ্রামের দুই যুবক-যুবতীর মধ্যে দুঃসম্পর্ক ছিল। তারা প্রেমে জড়িয়ে পড়েন এবং কয়েকদিন আগে বিয়ে করেন। তবে এই সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি গ্রামের বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ। তারপরই স্থানীয় রীতিনীতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে নবদম্পতিকে দেওয়া হয় ‘শাস্তি’ — গরুর বদলে তাঁদের দিয়ে হাল চাষ করানো হয়।
ভাইরাল ভিডিওর দৃশ্য:
ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, ধানের জমিতে ওই দম্পতির ঘাড়ে জোয়াল চাপানো হয়েছে। তাঁরা হাল টেনে চলেছেন, আর পেছনে লাঠি হাতে কয়েকজন দাঁড়িয়ে। কেউ লাঠি দিয়ে হুমকি দিচ্ছেন, কেউ বা আবার হাততালি দিয়ে তামাশা করছেন। সামাজিক অপমানের এই নির্মম পর্ব এখানেই শেষ হয়নি—পরবর্তীতে তাঁদের স্থানীয় মন্দিরে নিয়ে গিয়ে ‘শুদ্ধিকরণ’ও করা হয়।
When culture becomes vulture !
— Amiya_Pandav ଅମିୟ ପାଣ୍ଡଵ Write n Fight (@AmiyaPandav) July 11, 2025
A scene from Rayagada district of #Odisha ! A boy n girl who love each other are forced to plough in public just like bullocks as punishment !
It's inhuman indeed ! should be stopped @Ashok_Kashmir @irfhabib @BabelePiyush @amityadavbharat pic.twitter.com/4w2hNaMGy5
দ্য ইন্ডিয়ান ক্রনিকলস এই ভিডিওর সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি, তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়া এই ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন।
পুলিশের প্রতিক্রিয়া:
রায়গড়ার পুলিশ সুপার এস স্বাতী কুমার জানিয়েছেন,
“আমরা স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছি এবং অভিযুক্তদের শনাক্ত করার কাজ চলছে। যারা এই ঘটনায় জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
প্রশাসনের একাংশ জানিয়েছে, এই ঘটনা শুধু আইন বিরুদ্ধ নয়, এটি সম্পূর্ণ অমানবিক এবং মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনের শামিল।
রায়গড়ায় এমন সামাজিক শাস্তির ঘটনা এই প্রথম নয়। চলতি বছরের জানুয়ারিতেও এক আদিবাসী পরিবারকে ‘শুদ্ধিকরণ’-এর নামে মাথা কামিয়ে দেওয়ার মতো লাঞ্ছনার মুখে পড়তে হয়েছিল। সেই পরিবারে মেয়ের অপরাধ—তিনি ভিন্ন জাতের পুরুষকে বিয়ে করেছিলেন।