ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর নতুন প্রতিশোধমূলক অভিযান ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ চরম আঘাত হানল সন্ত্রাসবাদের ঘাঁটিতে। পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মোট ২১টি জঙ্গিঘাঁটি নিশানায় রাখে ভারতীয় বিমানবাহিনী। বহুল আলোচিত এই অভিযানে প্রাণ হারালেন জইশ-ই-মহম্মদ (জেইএম)-এর প্রধান মাসুদ আজ়হারের পরিবারের ১০ জন সদস্য। পাকিস্তান সরকার এই হামলার ঘটনা স্বীকার করে নিয়েছে। নিহতদের মধ্যে মাসুদের বোন এবং শ্যালকও রয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছে।
ভারত কেন বহওয়ালপুর শহরকে নিশানা করল, সেই প্রশ্নও উঠেছে। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানেই জইশের শক্ত ঘাঁটি এবং সদর দফতর অবস্থিত। ‘জামিয়া মসজিদ শুভান আল্লাহ্’ ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ। এই ক্যাম্পাসেই মাসুদ আজ়হার বসবাস করতেন এবং ২০২৪ সালের শেষ দিকেও তাঁকে সেখানে দেখা গিয়েছে।
হামলার সময়, মঙ্গলবার রাত ১টা থেকে দেড়টার মধ্যে, ভারতীয় বাহিনী একযোগে ২১টি জঙ্গিঘাঁটিতে আঘাত হানে। এই আক্রমণেই মাসুদের পরিবারের ১০ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে বলে আজ়হার নিজেই একটি বিবৃতিতে স্বীকার করেছেন। যদিও পাকিস্তানি মিডিয়ার দাবি, নিহতের সংখ্যা ১৪ জন। তবে আজ়হার নিজে এখনও জীবিত কি না, সেই বিষয়ে কোনও নিশ্চিত তথ্য মেলেনি।
এই হামলার পরিপ্রেক্ষিতে অনেকেই মনে করছেন, ভারত গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনারই প্রত্যাঘাত করল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আগে থেকেই জানিয়েছিলেন, এই জঘন্য হামলার যোগ্য জবাব দেওয়া হবে এবং সেনাবাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছিল।
এই অভিযানে শুধু বহওয়ালপুর নয়, পাক অধিকৃত কাশ্মীরের কোটলিতেও হামলা চালানো হয়। সেখানে নিহত হন লশকর-এ-ত্যায়বার এক শীর্ষ ধর্মীয় প্রচারক মহম্মদ ইকবাল। ভারত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, এই হামলা শুধুমাত্র জঙ্গিঘাঁটিকেই লক্ষ্য করে চালানো হয়েছিল, কোনও সাধারণ নাগরিক বা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পরিকাঠামোতে আঘাত করা হয়নি।
তবে ভারতের এই হামলার পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “পাকিস্তান চুপ করে বসে থাকবে না। এর উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।”