ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে ফের উত্তেজনার সঞ্চার করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, কেন ভারত এখনও পর্যন্ত পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীর (PoK) দখল করেনি। এর জবাবে মোদী কংগ্রেসকেই পাল্টা প্রশ্ন করেন: “তাহলে আপনারাই কেন পিওকে নেননি?” – এই মন্তব্য ঘিরে দেশজুড়ে চর্চা শুরু হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদীর পাল্টা প্রশ্ন: কংগ্রেসকেই দায়ী করলেন?
সাক্ষাৎকারটি সম্প্রচারিত হয় একটি জাতীয় নিউজ চ্যানেলে, যেখানে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে সরাসরি প্রশ্ন করা হয়, “আপনারা যদি এত শক্তিশালী, তাহলে পিওকে এখনও দখল করেননি কেন?” এর জবাবে তিনি বলেন:
“আমি সেই জেনারেশনের নই যারা দেশভাগ ঘটিয়েছে। আপনারাই তো তখন ক্ষমতায় ছিলেন। যদি আপনাদের সাহস থাকত, তাহলে পিওকে আপনাদেরই নেওয়া উচিত ছিল।”
এই বক্তব্য স্পষ্টতই কংগ্রেস নেতৃত্বের উদ্দেশ্যে। মোদী মনে করিয়ে দেন যে ১৯৪৭ সালে দেশভাগ এবং তার পরবর্তী কাশ্মীর সংকটের সময় কংগ্রেসই ক্ষমতায় ছিল। ফলে পিওকের মতো গুরুতর বিষয়ে তাদের দায় অস্বীকার করা উচিত নয়।
#WATCH | Operation Sindoor | PM Narendra Modi says, "Congress has always compromised on national security. Those who are asking today why PoK was not taken back should first answer whose Govt gave the opportunity to Pakistan to capture PoK. The answer is clear. Whenever I mention… pic.twitter.com/sYzTNNgdAl
— ANI (@ANI) July 29, 2025
কংগ্রেসের পাল্টা জবাব: ইতিহাসকে বিকৃত করছেন মোদী?
মোদীর এই পাল্টা প্রশ্নের পর কংগ্রেস তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তাদের মতে, প্রধানমন্ত্রী ইতিহাস বিকৃত করছেন এবং অতীতের দায় এড়িয়ে নিজের ব্যর্থতা ঢাকছেন। কংগ্রেস নেতারা বলেন,
“মোদীজির হাতে এখন ক্ষমতা, তিনি চাইলে পদক্ষেপ নিতে পারেন। তাহলে তিনি এখনও পর্যন্ত কেন পিওকে দখল করেননি?”
এই মন্তব্য আবারও তুলে ধরেছে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুকে ঘিরে দোষারোপের রাজনীতি। যেখানে একদিকে প্রধানমন্ত্রী মোদী অতীতকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছেন, অন্যদিকে কংগ্রেস বলছে বর্তমানেই রয়েছে সমস্যার সমাধান।

অতীতের পিওকে সংকট: ইতিহাসের সংক্ষিপ্ত ফিরে দেখা
- ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময়, জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্য ভারতে অন্তর্ভুক্ত হলেও, পাকিস্তান সমর্থিত উপজাতি বাহিনী কাশ্মীরে হানা দেয়।
- মহারাজা হরি সিং তখন ভারতের সঙ্গে সংযুক্তিকরণের চুক্তিতে সই করেন।
- সেই সময় ভারতীয় সেনাবাহিনী পিওকেকে মুক্ত করার কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল। তবে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নেহরু জাতিসংঘে গিয়ে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেন, ফলে পিওকেই থেকে যায় পাকিস্তানের দখলে।
এই প্রসঙ্গেই মোদীর বক্তব্য – “যদি তখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হত, তাহলে আজ এই প্রশ্নই উঠত না।”
উপসংহার: জাতীয় নিরাপত্তা না কি রাজনৈতিক লাভের রাজনীতি?
পিওকে ইস্যুতে মোদীর বক্তব্য কেবল রাজনৈতিক চমক নয়, বরং জাতীয়তাবাদী আবেগকে উস্কে দেওয়ার একটি কৌশল হিসেবেও দেখা হচ্ছে। তবে সমালোচকদের মতে, এই ইস্যুকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা সঠিক নয়।
এই বিতর্কের মধ্যে দিয়ে একটাই বিষয় স্পষ্ট – কাশ্মীর এবং পিওকের প্রশ্ন এখনও ভারতের রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রে রয়ে গেছে। এবং তা আরও তীব্র হবে আগামী নির্বাচনী আবহে।
📣 পাঠকদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন:
আপনার কী মতামত? পিওকে কি অতীতেই দখল করা উচিত ছিল, নাকি এখন এর জন্য উপযুক্ত সময়?
কমেন্টে জানান এবং শেয়ার করুন আপনার বন্ধুদের সঙ্গে এই প্রতিবেদনটি।