বাঙালির আত্মসম্মান না কি নিছক ভুল বোঝাবুঝি? ‘প্রিয় বুম্বাদা’ প্রসেনজিতের এক মন্তব্য ঘিরে তীব্র বিতর্ক, চিঠি দিয়ে কড়া বার্তা দিলেন বাংলাপক্ষের মুখ গর্গ চট্টোপাধ্যায়।
বাংলা সিনেমার এক অনস্বীকার্য স্তম্ভ, মহানায়ক উত্তমকুমারের উত্তরসূরি বলা হয় যাঁকে— সেই প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য ঘিরে রীতিমতো ক্ষুব্ধ বাংলা সমাজের একাংশ।
সম্প্রতি মুম্বইয়ে হিন্দি ছবি ‘মালিক’–এর ট্রেলার লঞ্চ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন প্রসেনজিৎ। পাশে ছিলেন অভিনেতা রাজকুমার রাও ও পরিচালক পুলকিত। সেই সময় এক বাঙালি সাংবাদিক বাংলায় প্রশ্ন করতেই প্রসেনজিৎ পালটা প্রশ্ন ছুড়ে দেন— “বাংলায় প্রশ্ন করার দরকার কী?”
People like Prasenjit Chatterjee are the reason why Tollywood is languishing far behind the South Film Industry.
— Nabarun Bhattacharya (@Nabarun204) July 4, 2025
When a journalist asks him a question in Bengali, he asks – "Why do you need to talk in Bengali?", and then goes on to reply back in Hindi. pic.twitter.com/Nubdr5sVgA
এই মন্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন অনেকেই। তাঁদের মতে, একজন প্রখ্যাত বাঙালি অভিনেতার মুখে বাংলা ভাষার এমন অবজ্ঞা মেনে নেওয়া যায় না।
বাংলাপক্ষের অন্যতম মুখ গর্গ চট্টোপাধ্যায় প্রকাশ্যে চিঠি লিখে বলেন—

“এই ভাষাতেই আপনি গড়ে উঠেছেন। ‘প্রসেনজিৎ’ নামটি আজ ভারতবর্ষে পরিচিত হয়েছে বাংলা সিনেমার জন্যই। আজ আপনি কীভাবে সেই মাতৃভাষাকে অস্বীকার করেন?”
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, দক্ষিণ ভারতীয় অভিনেতাদের মতো নিজের ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি গর্বিত দৃষ্টিভঙ্গি দেখানো প্রয়োজন।
গর্গ আরও লেখেন—
“কামাল হাসান, রজনীকান্ত কিংবা জুনিয়র এনটিআর— কেউই হিন্দির মুখাপেক্ষী হন না। বরং মাতৃভাষায় কথা বলেই তাঁরা জাতির গর্ব হয়ে উঠেছেন।”
তিনি প্রসেনজিতের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার এবং ভবিষ্যতে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার অনুরোধ জানান।

তবে এই বিতর্কে সমাজের একাংশ বলছেন, প্রসেনজিতের উক্তি নিছকই কথার খেলা বা হালকা মেজাজে বলা। অনেকে আবার মনে করছেন, হিন্দি ইন্ডাস্ট্রিতে পা জমাতে চাওয়া ‘বুম্বাদা’র কৌশলও হতে পারে এই মন্তব্য।
তবে প্রশ্ন একটাই— একজন বাঙালি তার মাতৃভাষা নিয়ে এমন প্রশ্ন তুললে কি তা নিছক ‘স্টান্ট’ হিসেবেই গ্রহণযোগ্য?
The Indian Chronicles-এ আমরা ভবিষ্যতের জন্য আশা রাখি, আমাদের ‘বুম্বাদা’ আবারও বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রহরী হয়ে উঠবেন— ঠিক যেমন তিনি ছিলেন ‘জাতিস্মর’, ‘ভবানী পাঠক’, ‘অটোগ্রাফ’-এর মতো ছবিতে।