রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান চেয়ে শান্তি আলোচনায় বসতে ইচ্ছুক, তবে তিনি তার দেশীয় লক্ষ্যসমূহ অর্জনের পরেই সেটি করতে চান। ক্রেমলিন জানিয়েছে, রাশিয়া কোনও একতরফা ছাড় দিতে রাজি নয়, বরং আলোচনার মাধ্যমেই একটি কূটনৈতিক সমাধানে পৌঁছাতে চায়।
রাশিয়ার দৃষ্টিকোণ: শান্তি, তবে শর্তসাপেক্ষে
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সম্প্রতি একটি বিবৃতিতে বলেন, “পুতিন শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে আগ্রহী, তবে এটি হবে রাশিয়ার নিরাপত্তা ও স্বার্থ রক্ষা করে।” তিনি আরও জানান যে, ইউক্রেনের উপর পশ্চিমা দেশের প্রভাব, বিশেষ করে ন্যাটো সম্প্রসারণ, এখনো রাশিয়ার মূল উদ্বেগের বিষয়।
এই অবস্থান অনুযায়ী, পুতিন ইউক্রেনের কিছু ভূখণ্ডে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে চান এবং ডোনবাস ও ক্রাইমিয়া অঞ্চলের ওপর রাশিয়ার দাবি থেকে পিছিয়ে আসবেন না।

ইউক্রেন ও পশ্চিমা বিশ্বের প্রতিক্রিয়া
পুতিনের এই প্রস্তাবের প্রতি ইউক্রেন এবং পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতিক্রিয়া এখনও বেশ সতর্ক। ইউক্রেন বারবার বলছে, তারা রাশিয়ার দখলকৃত অঞ্চল ফেরত না পেলে কোনও আলোচনায় বসবে না।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি স্পষ্ট জানিয়েছেন যে,
“শান্তি কোনও শর্তে নয়, বরং আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসারেই হতে হবে।”
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন বারবার বলে আসছে যে রাশিয়ার আগ্রাসন কোনোভাবেই বৈধ নয় এবং পুতিনের যেকোনো প্রস্তাব যদি তার আগ্রাসী অবস্থান বৈধতা দেয়, তবে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।
যুদ্ধের ভবিষ্যৎ কি আলোচনার দিকে?
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যুদ্ধ দুই বছরের বেশি চলার পর এক ধরনের কূটনৈতিক ক্লান্তি তৈরি হয়েছে। অর্থনৈতিক চাপ, মানবিক ক্ষয়ক্ষতি এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চাপে পড়ে দুই পক্ষই শান্তি আলোচনার দিকেই ঝুঁকছে, যদিও কেউ-ই প্রথমে ছাড় দিতে রাজি নয়।
ইতোমধ্যেই চীন, ভারত ও তুরস্ক মধ্যস্থতার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। আন্তর্জাতিক মহলও এই ধরনের কোনও শান্তিপূর্ণ আলোচনার সম্ভাবনাকে স্বাগত জানিয়েছে।

উপসংহার: আশার আলো না কি কৌশলগত চাল?
পুতিনের “শান্তি আলোচনা” মন্তব্য অনেকের কাছে কৌশলগত অবস্থান হালকা করার চেষ্টা বলেই মনে হচ্ছে। তবে যুদ্ধক্ষেত্রে স্থবিরতা এবং আর্থিক ক্ষয়-ক্ষতির প্রেক্ষাপটে এই শান্তি আহ্বানকে সহজভাবে খাটো করা যায় না।
আলোচনা যদি শুরু হয়, তবে সেটি শুধু ইউক্রেন-রাশিয়া নয়, বরং গোটা বিশ্বের ভূরাজনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় আনবে।
📢 আপনার মতামত জানান: আপনি কি মনে করেন, রাশিয়া সত্যিই শান্তি চায় নাকি এটি একটি কূটনৈতিক কৌশল? নিচে কমেন্টে জানান, অথবা শেয়ার করুন এই প্রতিবেদন।