দ্য ইন্ডিয়ান ক্রনিকলস | কলকাতা | ৪ জুলাই, ২০২৫
একুশের পুরনো ক্ষত এখনও অক্ষত, আর তারই জেরে ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগেই স্পষ্ট বার্তা দিতে চাইছেন বিজেপির নবনিযুক্ত রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। তাঁর বক্তব্য, ‘নো ভোট টু বিজেপি’ স্লোগানের আড়ালে তৃণমূলের সুবিধা করে দেওয়া বন্ধ হোক। বরং সম্মিলিত বিরোধিতার মাধ্যমে এবার তৃণমূলকেই সরানোর ডাক দিলেন তিনি।
তাঁর কথায়,
“যাঁর যা পতাকা আছে, ওই পতাকাগুলো কিছুদিনের জন্য আলমারির মাথায় তুলে রাখুন। পথে নামুন, তৃণমূলকে সরান।”
বৃহস্পতিবার বিজেপির রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেন দক্ষিণ হাওড়া যুব মোর্চার প্রাক্তন সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম জনসমক্ষে ভাষণেই তিনি বাম ও কংগ্রেসকে বার্তা দেন,
“নো ভোট টু বিজেপি’র আড়ালে আর চক্রান্ত নয়। তাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই শক্তি দেওয়া হয়।”
‘নো ভোট টু বিজেপি’-এর প্রেক্ষাপট: একুশ থেকে চব্বিশ
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বামপন্থীদের একাংশ ‘নো ভোট টু বিজেপি’ স্লোগান তোলে। উদ্দেশ্য ছিল বিজেপিকে রুখে দেওয়া। কিন্তু ফলস্বরূপ, তৃণমূল একতরফা জয় পায় এবং বিজেপি দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হলেও ক্ষমতায় আসতে ব্যর্থ হয়। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপির ভোট শতাংশ প্রায় একই থাকলেও, বাম ও কংগ্রেস সম্মিলিতভাবে মাত্র ১১% ভোট পায়। তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে ভোটের ব্যবধান ছিল ৭%।
এই প্রেক্ষাপটেই বিজেপি নেতৃত্ব চাইছে, ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটে বাংলার রাজনীতিতে পূর্ণ মেরুকরণ ঘটাতে। অর্থাৎ লড়াই হোক সরাসরি তৃণমূল বনাম বিজেপির মধ্যে।
উদার হিন্দুদের উদ্দেশে বার্তা, উগ্রতার পথ নয়
যদিও শমীক ব্যক্তিগতভাবে উগ্র হিন্দুত্বের রাজনীতির পন্থী নন, বরং তিনি বাজপেয়ী ঘরানার একজন উদারপন্থী নেতা। তাই বাংলার উদার হিন্দু ভোটারদের জন্য তাঁর বার্তা:
“বিজেপি সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নয়। আমরা চাই, দুর্গাপুজোর বিসর্জন আর মহরমের মিছিল যেন একই রাস্তায় শান্তিপূর্ণভাবে যেতে পারে।”
এখানেই তাঁর কৌশল স্পষ্ট—হিন্দু ভোটারদের একত্রিত করা, কিন্তু তাতেও উদারপন্থার বার্তা বজায় রাখা।
সংক্ষেপে মূল বার্তা:
- শমীক ভট্টাচার্য বাম ও কংগ্রেসকে আহ্বান জানালেন—‘নো ভোট টু বিজেপি’ নয়, বরং ‘তৃণমূল হটাও’ হোক মূল স্লোগান।
- একুশের ভোটে এই স্লোগানের ফলে তৃণমূলকে সুবিধা হয়েছে বলেই দাবি বিজেপির।
- বিজেপির লক্ষ্য, ২০২৬-এ সম্পূর্ণ রাজনৈতিক মেরুকরণ, তৃণমূল বনাম বিজেপি দ্বৈরথ।
- শমীকের বার্তায় হিন্দু উদার ভোটারদের টানার ‘সফট হিন্দুত্ব’ কৌশলও স্পষ্ট।