দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার এক উজ্জ্বল নক্ষত্র বিএস সারোজা দেবী, যিনি দীর্ঘ সময় ধরে দর্শকদের মুগ্ধ করে রেখেছেন তাঁর অভিনয় দক্ষতা দিয়ে, সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে তামিল সুপারস্টার এম.জি.আর-এর প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা এবং জীবনের কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে খোলাখুলি কথা বলেন। তিনি জানান, এম.জি.আর শুধুমাত্র একজন সহ-অভিনেতা নন, বরং তাঁর কাছে ছিলেন একজন “অনুব দেইবম” — মানে ভালবাসার দেবতা।
এম.জি.আর-এর প্রতি সারোজা দেবীর ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা
সারোজা দেবী ও এম.জি.আর বহু সফল ছবিতে একসাথে কাজ করেছেন, যেমন Anbe Vaa, Periya Idathu Penn এবং Enga Veettu Pillai। তাঁদের রসায়ন ছিল অনবদ্য এবং দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল।
সারোজা দেবী সাক্ষাৎকারে বলেন,
“এম.জি.আর আমাকে সবসময় শ্রদ্ধা করতেন, উৎসাহ দিতেন এবং নারী হিসেবে নিজের পথ খুঁজে নিতে সাহস জুগিয়েছেন। তিনি আমার কাছে একজন ‘অনুব দেইবম’।”
এই মন্তব্যে বোঝা যায়, এম.জি.আর কেবল একজন কিংবদন্তি নন, বরং সহ-অভিনেত্রীদের জীবনে সাহসী ভূমিকা পালনকারীও ছিলেন।
স্বামীর মৃত্যুর পর কেন সারোজা দেবী আর বিয়ে করেননি?
১৯৮৬ সালে তাঁর স্বামী হরিশ মারা যান। অনেকেই ভাবতেন, সারোজা দেবী হয়তো আবার নতুন জীবন শুরু করবেন। কিন্তু তিনি সিদ্ধান্ত নেন, আর বিয়ে করবেন না।
এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
“আমি জানতাম একজন পুরুষ সঙ্গী ছাড়াও জীবন পরিচালনা করা সম্ভব। আমি চেয়েছিলাম নিজের জন্য, আমার পরিবারের জন্য ও আমার শিল্পী জীবনের প্রতি দায়বদ্ধতার জন্য একা পথ চলতে।”
তাঁর এই সিদ্ধান্ত বহু নারীর কাছে অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে দাঁড়ায়।
আজকের দিনে যেখানে সমাজ এখনও একা নারীর জীবনকে চ্যালেঞ্জ করে, সেখানে সারোজা দেবীর মতো ব্যক্তিত্ব এক উদাহরণ হয়ে থাকেন।
শক্ত নারীত্বের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছেন সারোজা দেবী
তারকা জীবন সত্ত্বেও সারোজা দেবী নিজের আত্মসম্মান, আত্মবিশ্বাস এবং স্বাধীনতা ধরে রেখেছেন। আজকের সমাজে যেখানে নারীদের প্রতি এখনও প্রথাগত চাপ থাকে, সারোজা দেবীর মতো সিদ্ধান্ত নতুন প্রজন্মের নারীদের শেখায় নিজের জন্য বাঁচার সাহস।
তাঁর মতে,
“জীবন মানেই সঙ্গী থাকা নয়, নিজের আত্মমর্যাদাকে ধারণ করে চলাই সঠিক পথ।”
উপসংহার: নারী স্বাধীনতার অনন্য উদাহরণ
সারোজা দেবীর জীবন কেবল একজন অভিনেত্রীর নয়, বরং একজন সাহসী, আত্মনির্ভরশীল নারীর গল্প, যিনি নিজের বিশ্বাসে অনড় থেকে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে সাহস দেখিয়েছেন।
তাঁর ‘অনুব দেইবম’ এম.জি.আর-এর প্রতি শ্রদ্ধা হোক কিংবা তাঁর বিয়ে না করার কঠিন সিদ্ধান্ত — দুইই আমাদের শেখায়, নারী নিজের জীবনের চালক হতে পারে।