আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ফোনালাপ-কাণ্ডে রায়, আওয়ামি লিগ জানাল বিচার প্রহসন
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লিগ প্রধান শেখ হাসিনাকে ছ’মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিল ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বিতর্কিত একটি ফোনালাপের ভিত্তিতে পুলিশের তদন্তে বাধা, প্রশাসনকে হুমকি এবং বিরোধীদের বিরুদ্ধে কড়া উস্কানির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন হাসিনা। দীর্ঘ শুনানি শেষে বুধবার এই ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করে বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ।
এই মামলাটি ছিল হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথম এবং একমাত্র চলতি বিচারপ্রক্রিয়া, যেখানে ট্রাইব্যুনাল সরাসরি তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে কারাদণ্ড ঘোষণা করল। আর এক সহ-অভিযুক্তকে দু’মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আদালতে রাষ্ট্রের তরফে দাবি করা হয়, যে ফোনালাপটি তদন্তের মূল ভিত্তি ছিল, সেটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) মাধ্যমে তৈরি নয়, এবং পরীক্ষায় তা শেখ হাসিনার কণ্ঠস্বর বলেই প্রমাণিত হয়েছে।

ওই ফোনালাপে এক নারীকণ্ঠকে বলতে শোনা যায়—
“আমার নামে আড়াইশো খুনের মামলা হয়েছে, অর্থাৎ আমি আড়াইশোটা খুন করার পারমিশন পেয়ে গেছি।”
এছাড়াও পুলিশ ও প্রশাসনের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে সেই কণ্ঠে আরও শোনা যায়—
“যারা আওয়ামী লিগের নেতাকর্মীদের নিপীড়ন করছে, তারা কেউ রেহাই পাবে না। এক মাঘে শীত যায় না।”
বিচারপতি রায়ের শেষে বলেন, এমন মন্তব্য শুধুমাত্র হুমকি নয়, সরাসরি রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা ও তদন্ত প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপের শামিল।
তবে হাসিনার নিযুক্ত আইনজীবীরা আদালতে দাবি করেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নির্দোষ। সরকার বিরোধী চক্রান্তেই এই মামলা দায়ের হয়েছে এবং বিচার প্রক্রিয়াটি পক্ষপাতদুষ্ট।
রায়ের পর প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লিগ নেতৃত্ব এই বিচারকে “প্রহসন” আখ্যা দিয়েছে। দলীয় মুখপাত্ররা জানিয়েছেন, তাঁরা এই বিচারকে স্বীকৃতি দেন না এবং আইনি পথে লড়াই চালিয়ে যাবেন। পাশাপাশি এই মামলার শুনানিতেও হাসিনা এবং দল কোনও অংশ নেয়নি।