The Indian Chronicles প্রতিবেদন:
আরজি কর হাসপাতাল-কাণ্ডের পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা ছিল, পুজোর পরেই রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হবে। কিন্তু সময় পেরিয়ে আরও একটি পুজো আসন্ন, অথচ সেই নির্বাচনের কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
সম্প্রতি কসবা আইন কলেজে এক ছাত্রীর উপর বর্বর গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের সঙ্গে শাসকদলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি নেতাদের নাম জড়ানোয় ফের উঠে এসেছে সেই পুরনো প্রশ্ন— ছাত্র সংসদের নির্বাচন কবে?

টিএমসিপির রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, নতুন সেমেস্টার কাঠামো এবং কোভিডের পরে পরিবর্তিত শিক্ষাব্যবস্থা নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার অন্যতম কারণ। তবে দলের অন্দরেই একাংশ মানছেন, দীর্ঘদিন ভোট না-হওয়ায় একাংশ ‘পাকা মাথার’ নেতার দাদাগিরি থামানো যাচ্ছে না।
২০১৭ সালের পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এবং তার অধীন কলেজগুলোতে আর নির্বাচন হয়নি। যাদবপুর বা প্রেসিডেন্সিতেও বছর কেটে যাচ্ছে বিনা নির্বাচনে। ফলে প্রশ্ন উঠছে— ক্যাম্পাসে ‘অনির্বাচিত ইউনিয়ন’ নামেই যদি ছাত্র রাজনীতি চলতে থাকে, তাহলে ছাত্র অধিকার বা গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণের ভবিষ্যৎ কী?
বিরোধীরা বলছে, ইচ্ছাকৃতভাবে নির্বাচন আটকে রাখা হয়েছে টিএমসিপি-র কিছু গোষ্ঠী এবং ক্যাম্পাসের অর্থচক্রকে বজায় রাখতে। কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী থেকে এসএফআই-এর দেবাঞ্জন দে, সকলেই এই ঘটনাকে শিক্ষাঙ্গনের নব্য অরাজকতা বলে অভিহিত করছেন।
মমতা-অভিষেকের প্রতিশ্রুতি— ছাত্র সংসদে ৫৫ শতাংশ আসনে ছাত্রীদের প্রতিনিধিত্ব— তাও কেবল কথার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে।
এদিকে শাসকদলের অনেক প্রথম সারির নেতা মনে করছেন, বিরোধীদের অনুপস্থিতির মধ্যেও কলেজ চত্বরে অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠী কোন্দল এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, ভোট হলে ‘মধু ভাগাভাগি’-তে বড় রকমের সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে।
শেষ পর্যন্ত, নির্বাচন প্রসঙ্গে যা চলছে তা এক দীর্ঘ ‘গবেষণা’। এবং সেই গবেষণার ফলাফল কবে বেরোবে, কেউ জানেন না। ততদিনে আরও কয়েকটি কসবা বা আরজি কর কাণ্ড যে রাজ্যের শিক্ষাঙ্গনে ঘটবে না, তার কোনও গ্যারান্টি নেই।