সুচিত্রা সেনের নাম অপসারণ: ইতিহাসের বিস্মৃতি না কি রাজনৈতিক কৌশল?
বাংলাদেশের পাবনার গভর্নমেন্ট এডওয়ার্ড কলেজের মহিলা হোস্টেলের নাম থেকে সম্প্রতি বিখ্যাত অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনের নাম সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তে পশ্চিমবঙ্গের চলচ্চিত্র মহল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। নতুন নামকরণ ‘জুলাই ৩৬ স্টুডেন্ট ডরমেটরি’ রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ইতিহাসের প্রেক্ষাপট
সুচিত্রা সেন, যিনি ১৯৩১ সালে পাবনায় জন্মগ্রহণ করেন, বাংলা চলচ্চিত্রের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাঁর স্মৃতিকে সম্মান জানিয়ে পাবনার এই হোস্টেলের নামকরণ করা হয়েছিল। তবে, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর এই নাম অপসারণ করা হয়েছে, যা অনেকের মতে ইতিহাসের প্রতি অবজ্ঞা।

প্রতিবাদ ও প্রতিক্রিয়া
পশ্চিমবঙ্গের চলচ্চিত্র জগতের অনেকেই এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, সুচিত্রা সেন শুধুমাত্র একজন অভিনেত্রী নন, তিনি দুই বাংলার সাংস্কৃতিক ঐক্যের প্রতীক। এই নাম অপসারণ দুই দেশের সম্পর্কের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

সুচিত্রা সেনের পৈতৃক বাড়ির বর্তমান অবস্থা
পাবনায় সুচিত্রা সেনের পৈতৃক বাড়ি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত অবস্থায় রয়েছে। যদিও ২০১৪ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট এই বাড়িকে জাদুঘরে রূপান্তরের নির্দেশ দিয়েছিল, তবে এখনো পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয়নি। স্থানীয়রা এই বাড়িকে ‘সুচিত্রা সেন স্মৃতি জাদুঘর’ হিসেবে গড়ে তোলার দাবি জানিয়ে আসছেন।
সুচিত্রা সেনের নাম অপসারণ একটি বৃহত্তর প্রশ্ন উত্থাপন করে: আমরা কি আমাদের ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করছি? এই সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র একটি নাম পরিবর্তন নয়, এটি আমাদের যৌথ স্মৃতি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন।