দিল্লি | ২৮ জুলাই ২০২৫ | The Indian Chronicles
বিহারে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রক্রিয়ায় বড়সড় প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট। আধার কার্ড ও ভোটার আইডি কার্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিচয়পত্রগুলি এই তালিকায় না রাখার কারণ জানতে চেয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে কড়া বার্তায় বিচারপতিরা জানিয়ে দেন—এভাবে গণহারে নাম বাদ দেওয়া গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার পরিপন্থী। বরং মানুষের নাম অন্তর্ভুক্ত করাই কর্তব্য।
সোমবার বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চে এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি হয়। সেখানে আদালত সরাসরি জানতে চায়—কেন আধার কার্ড বা EPIC (Electoral Photo Identity Card)-এর মতো নথি এই বিশেষ ও নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়ার বিবেচনায় আনা হয়নি?
আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, কমিশন যে নথিগুলি তালিকাভুক্ত করেছে, সেগুলিরও প্রতিটির জাল সংস্করণ পাওয়া যায়। তাই শুধু এই যুক্তিতে আধার বা ভোটার কার্ডকে বাতিল করা যায় না। বিচারপতির মন্তব্য, “আগামিকাল দেখা যাবে, ১১টি নথিই জাল করা সম্ভব। কিন্তু তার মানে কি সবকিছুই বাদ যাবে? গণহারে নাম বাদ দেওয়া বন্ধ হোক। বরং গণহারে নাম অন্তর্ভুক্ত করুন।”
কমিশনের পক্ষে আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী জানান, আধার বা রেশন কার্ড একা ব্যবহারযোগ্য নয়, কারণ এগুলি সহজেই নকল করা যায়। পাশাপাশি জনসংখ্যাগত পরিবর্তন এবং অভিবাসনের কারণে বিহারে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করাটা অত্যন্ত জরুরি। বিগত ২০ বছর ধরে এই ধরনের নিবিড় সংশোধন হয়নি।
তবে আদালতের পাল্টা বক্তব্য, কোনও নথি জাল হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেই সেটিকে বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। বরং কমিশনের দায় রয়েছে সেইসব নথি যাচাই করার, নাম কেটে দেওয়ার নয়। এক ধাক্কায় নাম বাদ দেওয়া হলে বহু প্রকৃত ভোটার নির্বাচনের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন।
সোমবার সম্পূর্ণ শুনানি সম্ভব হয়নি। মঙ্গলবার ফের এই মামলার শুনানি হবে সুপ্রিম কোর্টে। মামলাকারীদের তরফে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করার উপর স্থগিতাদেশ চাওয়া হলেও, আপাতত গোটা প্রক্রিয়া স্থগিত করতে নারাজ আদালত। তবে কড়া বার্তা দিয়ে রেখেছে—প্রয়োজনে সম্পূর্ণ তালিকাই বাতিল করা হতে পারে।