সময় টা হঠাৎ করেই কেমন বদলে গেল। আমাদের বাঙলা ও বাঙালির অন্যতম পরিচয় ছিল শিল্প ও সংস্কৃতি। ভারতের মধ্যে বাঙালিকে তার শিল্প ও সংস্কৃতির ধারক ও বাহক বলা যেতেই পারতো কিন্তু হঠাৎই পাশ্চাত্য সংস্কৃতি যেন সব গ্রাস করে ফেলছে। বাংলা আর বাঙালি মানেই তো স্বদেশীয় নৃত্য সঙ্গীত কবিতা ইত্যাদি অনেক কিছু যা আমাদের পরিচয়। বাংলা ভাষা সম্ভবত পৃথিবীতে সবথেকে বেশী সুমিষ্ট ভাষা হিসাবেই পরিচিত। কিন্তু এই সব কিছুই আমাদের কাছথেকে হারাতে শুরু করেছিল। বাঙালি যুব সম্প্রদায় বাংলা ভাষা বলতেই লজ্জা পেতে শুরু করলো। স্বদেশী সঙ্গীত ও নৃত্যের জায়গা বেদখল করতে শুরু করলো পাশ্চাত্য ধারার সঙ্গীত ও নৃত্য। পৃথিবী থেকে প্রায় লুপ্ত হয়ে যেতে যেতে স্বদেশীয় ধারার শিল্পীরা, বাংলা ও বাঙালির ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি বজায় রাখার লড়াই টুকু চালিয়ে যাচ্ছিলেন ঠিক সেই সময়েই হঠাৎ করেই একটা অজানা মহামারী এসে গোটা পৃথিবীবাসী কে করলো গৃহবন্দী। মানুষ তার আপনজনদের হারাতে শুরু করলো। বাংলাতেও তার প্রভাব ছিল অব্যাহত। এর সাথে সাথেই এক এক করে বন্ধহতে শুরুকরে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়াত্ত ও বহুজাতিক শিল্প প্রতিষ্ঠান গুলি। মানুষ এই নিয়ে যখন দিশেহারা ঠিক তখনই বাংলার ওপর দিয়ে বয়ে যায় আম্ফান সাইক্লোন। বাংলার গ্রাম থেকে শহর হয়েযায় তছনছ।
বাংলার মানুষের জীবন যাত্রা তখন একেবারেই তলানিতে ঠিক তখনই মনের জোর নিয়ে নতুন করে পথ শুরু করলেন প্রখ্যাত নৃত্য শিল্পী প্রেরনা ঘোষ। গুরু অমলা শঙ্করের স্নেহধন্যা, প্রেরনা ঘোষের নতুন করে কোন পরিচয়ের প্রয়োজন না থাকলেও শুধুমাত্র বাঙালির সংস্কৃতির ধারা বজায় রাখার সাথে দিশেহারা যুব সম্প্রদায় কে নতুন করে জীবনের স্বাভাবিক ছন্দে ফেরাতে প্রেরনা যোগাতে শুরু করলেন। কলকাতার উত্তর ও দক্ষিন শহরতলীতে তার প্রশিক্ষণ শিবির থাকলেও, কোভিড কালে তিনি অনলাইনে ছোট থেকে বড় সকল কেই প্রথাগত নৃত্য শেখা এবং নিজেকে বিষন্নতা মুক্ত কিভাবে রাখতে হবে সেই উদ্যোগ নিলেন। এক এক করে ভীড় বাড়তে লাগলো সেই আয়োজনের।
আজ পৃথিবী কোভিড মুক্ত। মানুষ আবার আগের মতো স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে। ফিরতে শুরু করেছে বাঙালির নিজের সংস্কৃতির প্রতি টান। আজ প্রখ্যাত নৃত্য শিল্পী প্রেরনা ঘোষের ছাত্রী সংখ্যা গোটা কলকাতা শহরে নেহাত কম নয়। ছোট দের সাথে সাথে বড়দের সংখ্যাটাও চোখে পড়ার মতো। তাদের মধ্যে আবার কেউ চিকিৎসক তো আবার কেউ শিক্ষিকা। তারা বলেন এখানে নৃত্য ছাড়াও সঙ্গীত সহ অনেক কিছু নিয়ে চর্চা করার একটা স্বাধীনতা আছে যা অন্য কোথাও পাওয়া যায়না।
প্রেরনা ঘোষ প্রতিষ্ঠিত এই Dance study center সব ছাত্রীদের কাছে জীবনের এক অন্য তম প্রেরনার উৎস স্থল হয়ে দাড়িয়েছে। নৃত্যগুরু নয় বরং নিজের দিদি মনে করেন সব ছাত্রীরা। অবিভাবকরাও বেশ মোহিত এই নৃত্য প্রতিষ্ঠানের প্রতি। বর্তমানে বাংলার গ্রাম শহর এমনকি রাজ্যের বাইরে থেকেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পাচ্ছেন প্রায় প্রতি সপ্তাহেই।
চাইলে আপনি আপনারা যোগাযোগ করতেই পারেন Dance study centre এর সাথে।
অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ : https://www.facebook.com/profile.php?id=100064183327568&mibextid=ZbWKwL
ফোন নম্বর : 98740 32617 ( 12am – 4pm )
শুধুমাত্র নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করাই নয়, জীবনের নানা ওঠাপড়া, সন্তান ও সংসার সামলে বাংলা ও বাঙালির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ধারাকে নবতম রুপে বাংলার নতুন যুব সম্প্রদায়ের হাতে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য গর্বিত করেছেন সমগ্র বাঙালি জাতি কে। কে বলে বাংলার নারীরা পিছিয়ে পড়েছে?
দ্যা ইন্ডিয়ান ক্রনিকেলস আয়োজিত “অনন্যা সম্মান ২০২৩” এর জন্য মনোনীত হলেন প্রেরনা ঘোষ। তার এই কঠিন লড়াই এর কাহিনি শোনাতে আসছেন অনন্যা সম্মানের মঞ্চে।