কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে ফের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত। রাজ্যের ভোটার তালিকায় ‘ভূত’ ধরতে গঠিত কোর কমিটি রাতারাতি স্থগিত করায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তিতেই কি এই সিদ্ধান্ত? নাকি দলের কৌশলগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত?
মমতার ‘ভূত’ তত্ত্ব ও কোর কমিটির জন্ম
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি নেতাজি ইন্ডোরে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের ভোটার তালিকায় ‘ভূতুড়ে ভোটার’ নিয়ে সরব হন। সেই সমস্যা মোকাবিলা করতে তিনি জেলায় জেলায় কোর কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) তৃণমূল ভবনে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর নেতৃত্বে বৈঠকে কোর কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাতারাতি স্থগিতাদেশ, উঠছে প্রশ্ন
তৃণমূল সুপ্রিমোর এই সিদ্ধান্তের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জেলায় জেলায় কোর কমিটি গঠনের নির্দেশ স্থগিত করা হয়। এই আকস্মিক পরিবর্তনের কারণ কী? রাজনৈতিক মহলে জল্পনা, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই কমিটির গঠনে আপত্তি জানিয়েছিলেন। তার ফলেই কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের সিদ্ধান্ত বদল করলেন?
অভিষেকের হাতে ফিরছে সংগঠনের দায়িত্ব?
তৃণমূল সূত্রে খবর, আগামী ১৫ মার্চ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলের সর্বস্তরের নেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করবেন। এই বৈঠকে নতুন কোর কমিটি গঠনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। প্রশ্ন উঠছে, মমতার সিদ্ধান্ত স্থগিত হওয়ার পেছনে অভিষেকের মতামত কতটা প্রভাব ফেলেছে? দলে কি আবারও শক্তিশালী হচ্ছে অভিষেকের কর্তৃত্ব?
আইপ্যাকের ভূমিকা নিয়ে দ্বন্দ্ব?
মাস তিনেক আগে তৃণমূল বিধায়কদের বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যে আইপ্যাক নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। তবে ২৭ ফেব্রুয়ারির সম্মেলনে তিনি আইপ্যাকের প্রশংসা করেন এবং নেতাদের আইপ্যাক নিয়ে ‘উল্টোপাল্টা’ মন্তব্য না করার নির্দেশ দেন। তাহলে কি আইপ্যাকের ছায়া আবারও দীর্ঘ হচ্ছে?
শেষ কথা
তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে এই ঘটনাপ্রবাহ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে কি দলে নতুন করে সাংগঠনিক পুনর্গঠনের ইঙ্গিত? আগামী দিনে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব কাটিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস কীভাবে নিজের অবস্থান শক্তিশালী করে, তার দিকেই নজর থাকবে রাজ্য রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের।