তৃণমূল কংগ্রেস সম্প্রতি কাসেম সিদ্দিকীকে (যিনি আব্বাস সিদ্দিকীর ভাই) দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পদে নিয়োগ করেছে। তিনি ছিলেন ফুরফুরা শরিফের একাংশের প্রতিনিধি, যিনি অতীতে সরাসরি তৃণমূল ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতা করেছেন বলে অভিযোগ। হঠাৎ এমন নিয়োগ ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে—এ কি নিছক রাজনৈতিক কৌশল, নাকি সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ককে প্রভাবিত করার চেষ্টা?
🗣️ তহ্বা সিদ্দিকীর ক্ষোভ ও মন্তব্য

এই সিদ্ধান্তে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ফুরফুরা শরিফের আরেক পীরজাদা তহ্বা সিদ্দিকী। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন:
“কাশেম সিদ্দিকীকে এত বড় পদে বসানোয় সংখ্যালঘু সমাজ অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। যিনি একসময় মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করতেন, তাকেই এখন সম্মান দেওয়া হচ্ছে!”
তহ্বা সিদ্দিকীর দাবি, এতে রাজনৈতিক ভাবে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবেন আইএসএফ নেতা নওসাদ সিদ্দিকী।
🧭 কেন কাসেমকে তৃণমূলে? তৃণমূলের রাজনৈতিক পটপরিকল্পনা

রাজনৈতিক মহলের ধারণা, আসন্ন ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সংখ্যালঘু ভোট ছিনিয়ে আনতেই এই সিদ্ধান্ত। বিশেষত নওসাদের জনপ্রিয়তা যেভাবে বাড়ছে, তাতে তারই এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয়কে দলে টেনে কৌশলী চাল চালছে তৃণমূল।
তবে এটিও স্পষ্ট, কাসেম এখন আর তেমন প্রভাবশালী নয়, বরং তার এই পদোন্নতি উলটে ক্ষতি করতে পারে তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোটের ভিত।
📊 রাজনৈতিক বিশ্লেষণ: কে লাভবান, কে ক্ষতিগ্রস্ত?

ব্যক্তি/দল | লাভবান নাকি ক্ষতিগ্রস্ত? | কারণ |
---|---|---|
তৃণমূল কংগ্রেস | আপাত লাভ, ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত | সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিভাজন হতে পারে |
আইএসএফ ও নওসাদ | লাভবান | তৃণমূলের পদক্ষেপ উলটে আইএসএফকে সিম্প্যাথি ভোট এনে দিতে পারে |
সংখ্যালঘু ভোটার | বিভ্রান্ত, অসন্তুষ্ট | ধর্মীয় প্রতিনিধিত্ব নিয়ে বিভক্তি বাড়ছে |
📣 রাজনীতির নেপথ্য বার্তা
এই সিদ্ধান্তকে অনেকেই “ধর্মীয় রাজনীতির ব্যবহারে নতুন অধ্যায়” বলেই চিহ্নিত করছেন। কাসেমের পদোন্নতি যতটা না দলের ভিত মজবুত করবে, তার চেয়ে অনেক বেশি করে তৃণমূলকে রাজনৈতিক সমালোচনার মুখে ফেলে দিয়েছে।
তহ্বা সিদ্দিকীর কথায় স্পষ্ট,
“আমরা দেখছি কে কী করছে। ২০২৬ সালে সংখ্যালঘুরা জবাব দেবে।”
রাজনীতির মাঠে ধর্মীয় প্রতিনিধি নিয়ে এমন কৌশলী পদক্ষেপ পশ্চিমবঙ্গে নতুন নয়। তবে সময় বলবে, এই সিদ্ধান্ত তৃণমূলকে কতটা লাভ দেবে বা ক্ষতি করবে। আর সংখ্যালঘু সমাজ কীভাবে এই সিদ্ধান্তকে গ্রহণ করবে—তাও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।