তৃণমূল কংগ্রেসের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে সম্প্রতি শোকজ নোটিস পাঠানো হয়েছে। বিধানসভার শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির তরফে এই নোটিস জারি করা হয়, যেখানে তাঁকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। এই পদক্ষেপের পেছনে রয়েছে হুমায়ুন কবীরের সাম্প্রতিক মন্তব্য, যা দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে গণ্য হয়েছে।
শোকজের কারণ
বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় হুমায়ুন কবীর বলেন, “৭২ ঘণ্টার মধ্যে ওই কথা প্রত্যাহার না করলে ৪২ জন বিধায়ক আপনার ঘরের বাইরে আপনাকে বুঝে নেবে। আপনি পারলে ৬৬ জনকে নিয়ে আমার সঙ্গে মোকাবিলা করুন। আমার জাতিকে অপমান করা হলে, আমি ছেড়ে দেব না।” তিনি আরও বলেন, “মুর্শিদাবাদে যান, দেখে নেব আপনাকে।”

মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া
বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং হুমায়ুন কবীরকে শোকজ করার নির্দেশ দেন। তাঁকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কারণ দর্শিয়ে জবাব দিতে বলা হয়।

হুমায়ুন কবীরের প্রতিক্রিয়া
শোকজ নোটিস পাওয়ার পর হুমায়ুন কবীর জানান, তিনি এখনও পর্যন্ত কোনও নোটিস পাননি। তবে তিনি তাঁর অবস্থানে অবিচল রয়েছেন এবং বলেন, “আগে জাতি, তারপর দল।”

অতীতের বিতর্ক
এটি প্রথমবার নয় যখন হুমায়ুন কবীর দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। এর আগে তিনি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে পুলিশমন্ত্রী করার দাবি তুলেছিলেন এবং মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন। তখনও তাঁকে শোকজ করা হয়েছিল এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ধমকও খেয়েছিলেন। পরে তিনি প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে বলেন, “মমতা আমাদের দলের সর্বোচ্চ নেত্রী। আমি বিগত কয়েকদিন যে ধরনের কথা বাইরে বলেছিলাম, সেটা ভুল হয়েছে। আমার এই নিয়ে বাইরে কথা বলা উচিত হয়নি। তার জন্য আমি ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছি।”
সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীকেও সতর্কবার্তা
শুধু হুমায়ুন কবীরই নয়, মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীকেও মুখ্যমন্ত্রী সতর্ক করেছেন এবং তাঁকে মুখ খুলতে বারণ করেছেন।
এই ঘটনাগুলি তৃণমূল কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা ও নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্যের বিষয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। দলীয় নেতাদের প্রকাশ্যে মন্তব্য করা এবং তার পরিণতি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।