বাংলা ভাষা কি আজ অপরাধ? ভারতের মাটিতে মাতৃভাষা বাংলার পরিচয়ে কেন হেনস্থা হতে হবে কাউকে? সম্প্রতি অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার এক বিস্ফোরক মন্তব্যে যখন বাংলাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলে আখ্যা দেওয়া হল, তখনই প্রতিবাদের ঝড় ওঠে পশ্চিমবঙ্গে। আর সেই প্রতিবাদের আগুনে ঘি ঢেলে আজ, বুধবার, রাস্তায় নামছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং।

কলেজ স্কয়্যার থেকে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত বিশাল পদযাত্রা—এ যেন বাঙালির অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। মিছিলের সূচনালগ্ন দুপুর ১টা। শুধু কলকাতা নয়, রাজ্যের প্রতিটি জেলা থেকেও তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে চলছে প্রতিবাদ কর্মসূচি। বাঙালি জাতিসত্তা, বাংলা ভাষা ও সাংস্কৃতিক পরম্পরার উপর ক্রমাগত আক্রমণের প্রতিবাদে রাজপথে সরব হয়েছে শাসকদল।
রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, “বাংলা ভাষায় কথা বললেই আজ ভিনরাজ্যে মানুষকে অপমানিত হতে হচ্ছে। অসমে এক বঙ্গবধূ, যিনি কোচবিহার থেকে বিবাহসূত্রে অসমে গিয়েছিলেন, তাঁকে এনআরসি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, ফিরিয়ে আসতে বাধ্য করা হয়েছে। এ এক চরম জাতিবিদ্বেষ। আমরা এদেশে এমন ভারত চাইনি।”

এমনকি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও মন্ত্রিসভা বৈঠকে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তিনি স্পষ্ট বলেন, “বাংলাকে অপমান করা মানে ভারতীয় সংবিধানকেই অপমান করা। আমরা এই অন্যায় মেনে নেব না।”
এই প্রতিবাদের মূল বার্তা স্পষ্ট—বাংলা ও বাঙালিকে অবমাননা করলে রাজনৈতিক জবাব তো দেবই, রাস্তাতেও জবাব আসবে। হাওড়া, দমদম, সল্টলেক, ভাঙড়সহ রাজ্যের একাধিক অঞ্চল থেকে দলীয় কর্মী-সমর্থকের ঢল নামছে শহরের কেন্দ্রে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বাংলা ভাষা এবং জাতিগত স্বাভিমান ইস্যুতে এমন জোরালো আন্দোলন নিঃসন্দেহে এক রাজনৈতিক বার্তা। কেন্দ্র এবং বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির নীরবতাও এই ইস্যুকে আরও ঘনীভূত করছে।