প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে একটি বিস্ফোরক বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি রাশিয়াকে ৫০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে বলেছেন, এই সময়ের মধ্যে যদি ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তিচুক্তি না হয়, তবে তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় এসে রাশিয়ার তেল ক্রয়কারী দেশগুলির উপর ১০০% ট্যারিফ এবং কড়া নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবেন।
শান্তিচুক্তির জন্য ৫০ দিনের সময়সীমা: ট্রাম্পের পরিকল্পনা কী?
ট্রাম্পের মতে, তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনরায় ক্ষমতায় এলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করবেন। কিন্তু এবার তিনি সরাসরি রাশিয়ার উপর চাপ সৃষ্টি করেছেন, জানিয়ে দিয়েছেন যে ৫০ দিনের মধ্যে যদি মস্কো কোনও কার্যকর শান্তিচুক্তি না করে, তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশ যারা রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনছে, তাদের উপর চূড়ান্ত অর্থনৈতিক শাস্তি আরোপ করা হবে।
এই হুমকির পেছনে যুক্তি হিসেবে ট্রাম্প বলেছেন, “আমেরিকার অর্থনীতি দুর্বল হচ্ছে রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে। আমি এই যুদ্ধ বন্ধ করব, না হলে রাশিয়ার তেল থেকে লাভ করা দেশগুলিকে শাস্তি পেতে হবে।”

ট্রাম্পের হুমকি বিশ্ববাজার ও কূটনীতিতে কী প্রভাব ফেলবে?
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই বক্তব্য আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে একটি বড় বার্তা পাঠিয়েছে। যদি এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়, তবে চীন, ভারত, ও আরও কয়েকটি উন্নয়নশীল দেশ যারা রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করে, তারা সরাসরি অর্থনৈতিক বিপদের মুখে পড়বে।
বিশ্বব্যাপী তেলের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। একই সঙ্গে, ট্রাম্পের এমন অবস্থান বর্তমান বাইডেন প্রশাসনের কূটনৈতিক ব্যর্থতা তুলে ধরার একটি প্রচেষ্টা হিসেবেও ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।
“এটি শুধু রাশিয়ার বিরুদ্ধে নয়, বরং বৈশ্বিক তেল বাজারে একটি মোড় পরিবর্তনের শুরু,” — বলছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা।
ইউক্রেন যুদ্ধ ও মার্কিন রাজনীতি: ট্রাম্প বনাম বাইডেন
এই হুঁশিয়ারির পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যও রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ২০২4 সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের অন্যতম প্রচারমূলক বিষয় হতে চলেছে ‘আমি ক্ষমতায় এলে যুদ্ধ ২৪ ঘণ্টায় শেষ করব’ বার্তাটি।
এদিকে বাইডেন প্রশাসন ইউক্রেনকে সামরিক ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে চলেছে, কিন্তু তাতে যুদ্ধের কোনও স্থায়ী সমাধান আসেনি। এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে ট্রাম্প নিজেকে একজন ফলপ্রসূ শান্তিদূত হিসেবে তুলে ধরছেন, যিনি কূটনৈতিকভাবে কঠিন অবস্থান নিয়ে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে সক্ষম।
উপসংহার: ট্রাম্পের ডেডলাইন কেবল হুমকি নাকি বাস্তব সম্ভাবনা?
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই ঘোষণাটি নিঃসন্দেহে আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও অর্থনীতিতে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। যদিও তিনি এখনো ক্ষমতায় ফেরেননি, তবুও তার এই হুমকি বিশ্বনেতাদের মধ্যে আলোচনার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
এই প্রস্তাব বাস্তবায়নের সম্ভাবনা যেমন অনিশ্চিত, তেমনি এর প্রভাবও ব্যাপক হতে পারে। আগামী নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে কী ধরনের বৈদেশিক নীতি দেখা যাবে, তা নিয়ে এখন থেকেই বিতর্ক শুরু হয়েছে।
📢 আপনার মতামত দিন: আপনি কি মনে করেন ট্রাম্পের পরিকল্পনা কার্যকর হতে পারে? মন্তব্যে জানান!