প্রতিবেদন | The Indian Chronicles Science Desk
চিনের গবেষণায় বৈপ্লবিক অগ্রগতি! এবার দুই পুরুষ ইঁদুরের ডিএনএ থেকে তৈরি সন্তান নিজেও সুস্থ সন্তানের জন্ম দিতে সক্ষম হয়েছে—এক কথায়, জন্ম দিল ‘দুই বাবার নাতি/নাতনি’। এই যুগান্তকারী পরীক্ষার সফল প্রয়োগ ইঁদুরে বিজ্ঞানীদের সামনে নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। তবে, আপাতত মানবজাতিতে এর প্রয়োগ নিয়ে বিজ্ঞানীরা যথেষ্ট সতর্ক।

কি ঘটেছে গবেষণায়?
অ্যান্ড্রোজেনেসিস (Androgenesis)—এই প্রযুক্তিতে শুধুমাত্র পুরুষের ডিএনএ ব্যবহার করে সন্তান উৎপন্ন করা হয়। ২৫ জুন প্রকাশিত PNAS জার্নালে জানানো হয়েছে, দুই পুরুষ ইঁদুরের শুক্রাণু ব্যবহার করে গবেষণাগারে ২৫৯টি ভ্রূণ তৈরি করা হয়। এর মধ্যে তিনটির জন্ম সম্ভব হয় এবং বেঁচে যায় দুটি। চমকপ্রদ বিষয়, সেই ইঁদুর দুটি যথাযথ যৌন পরিপক্বতা অর্জন করে সুস্থ সন্তানের জন্ম দেয়।
কীভাবে সম্ভব হল এই সাফল্য?
)
- প্রথমে দুই পুরুষ ইঁদুরের শুক্রাণু সংগ্রহ করা হয়।
- একটি স্ত্রী ইঁদুরের ডিম্বাণু থেকে নিউক্লিয়াস সরিয়ে নেওয়া হয়—যাতে না থাকে মা ইঁদুরের ডিএনএ।
- এরপর সেই ডিম্বাণুতে পুরুষ শুক্রাণু প্রয়োগ করে নিষেক ঘটানো হয়।
- ভ্রূণ তৈরি হয় এবং সারোগেট মায়ের গর্ভে তা প্রতিস্থাপন করা হয়।
এই পুরো পদ্ধতিতে স্টেম সেল প্রযুক্তিরও প্রয়োগ ছিল, যা ভ্রূণের প্রজননক্ষমতা অর্জনে সহায়ক হয়।
বিজ্ঞানীদের মত ও সীমাবদ্ধতা

- ডঃ পার্থপ্রতিম মজুমদার, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ বায়োমেডিক্যাল জিনোমিকস-এর প্রতিষ্ঠাতা, জানিয়েছেন, এই পদ্ধতিতে এখনও মা ইঁদুরের মাইটোকন্ড্রিয়া (cytoplasmic inheritance) থেকে কিছু জিনগত অবদান থেকে যাচ্ছে।
- এই গবেষণায় জটিল ইমপ্রিন্টিং রিজন, স্টেম কোষ প্রযুক্তি, এবং সফল নিষেকের অনুপাত ছিল অত্যন্ত কম (২৫৯:৩)।
- তিনি সতর্ক করে বলেন, “এই পদ্ধতি মানব শরীরে প্রয়োগযোগ্য হতে বহু দশক লাগবে। তদুপরি, সম্ভাব্য জেনেটিক জটিলতা এবং নৈতিক প্রশ্নও রয়েছে।”
ভবিষ্যতের সম্ভাবনা কী?
এই প্রযুক্তি ভবিষ্যতে সমকামী পুরুষ যুগলের সন্তান ধারণের এক সম্ভাব্য রাস্তা খুলে দিতে পারে। তবে এখনই মানুষের ক্ষেত্রে প্রয়োগ নিয়ে আলোচনা করতে বিজ্ঞানীরা নারাজ। মানব শরীরে প্রয়োগে রয়েছে প্রচুর জটিলতা এবং নীতিগত বাধা।