ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র মতো ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং একাধিক জেলায় বিপর্যয়কর বন্যা—এই চরম প্রতিকূলতার মধ্যেও কৃষিক্ষেত্রে নতুন ইতিহাস গড়ল পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্য সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে রাজ্যে ধান উৎপাদন হয়েছে ২৫৬.৫৩ লক্ষ মেট্রিক টন, যা এখনও পর্যন্ত সর্বাধিক।
এই সাফল্যকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে অভিহিত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বার্তা দিয়ে তিনি রাজ্যের কৃষক, ভাগচাষি, খেতমজুর ও কৃষিক্ষেত্রে যুক্ত মানুষদের উদ্দেশে কুর্নিশ জানিয়েছেন। তাঁর কথায়,
“এই সাফল্যের পিছনে আছে ‘কৃষক বন্ধু’, ‘বাংলা শস্য বিমা’, ‘সুফল বাংলা’, খাজনা মুকুব, কৃষিযন্ত্রানীকরণ এবং সরকারি ক্রয়ের মতো জনমুখী নীতির বাস্তবায়ন।”
শুধু ধান নয়, বিগত এক দশকে ভুট্টা, ডাল, তেলবীজ এবং সুগন্ধি চালের উৎপাদনেও এসেছে গুণগত বৃদ্ধি। মুখ্যমন্ত্রীর মতে, এই সব নীতিগত পরিবর্তনের জন্যই কৃষকরা আজ জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলতে পেরেছেন।
বিশেষজ্ঞরাও এই সাফল্যকে কুর্নিশ জানিয়ে বলছেন,
“জলবায়ু সংকট ও ক্রমহ্রাসমান কৃষিজমির চাপে থেকেও রাজ্যের কৃষকরা যে ধারাবাহিক উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পেরেছেন, তা অন্য রাজ্যগুলোর কাছেও দৃষ্টান্তমূলক।”
‘কৃষক বন্ধু’ প্রকল্প, কৃষি বিমা, সহজ খাজনা ও সরকারি ক্রয়ের মতো ব্যবস্থাই রাজ্যের কৃষকদের সময়মতো সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করেছে। রাজ্য সরকারের মতে, এসব প্রকল্প বাস্তবায়নেই সম্ভব হয়েছে রাজ্যের কৃষি উৎপাদনের এই রূপান্তর।
এই সাফল্য শুধু বাংলার কৃষিক্ষেত্র নয়, গোটা দেশের জন্যই অনুপ্রেরণা।