বাড়ির কাছে মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় দুষ্কৃতীদের অতর্কিত হামলায় খুন হলেন জয়নগর থানার অন্তর্গত বামনগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য সাইফুদ্দিন লস্কর( ৪৩ )। তিনি আবার বামনগাছি অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি।মৃত সাইফুদ্দিন লস্করের স্ত্রী সেরিফা বিবি লস্কর আবার ওই বামনগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের পঞ্চায়েতের প্রধান।গুলির শব্দ শুনেই লোকজন ছুটে আসে এবং তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে জয়নগর এক নম্বর ব্লকের পদ্মেরহাট গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে এলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। জেলার পুলিশ সুপার পলাশ চন্দ্র ঢালি জানান দুটি বাইকে মোট চারজন এসেছিলেন। একজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। একজন মারা গিয়েছে। স্থানীয় জনতার দাবী তারা পিটিয়ে মেরেছেন। যদিও পুলিশ জানিয়েছে কি কারণে মৃত্যু তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দুটি দেহই এদিন ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। এদিকে ঘটনার খবর পেয়েই পদ্মেরহাট হাসপাতালে ছুটে আসেন স্থানীয় বারুইপুর পূর্ব বিধানসভার তৃণমূলের বিধায়ক বিভাস সরদার। বিভাস বাবুর দাবি এই খুনের ঘটনায় দুষ্কৃতীরাই খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে আর পুলিশ এখনো পর্যন্ত দু’জনকে ধরতে পেরেছে। হাসপাতালে আসেন জয়নগরের বিধায়ক বিশ্বনাথ দাস। তিনি এই খুনের দায় চাপান বিজেপি ও সিপিএমের উপরে। আরেক তৃণমূল নেতা শওকত মোল্লা জানান লোকসভা ভোটে জামানত বাজেয়াপ্ত হবে জেনেই এই খুন পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে। বামনেতা সুজন চক্রবর্তী জানান তৃণমূলের নিজেদের গন্ডগোলের জেরেই এই খুন। বিজেপির পক্ষ থেকে জানানো হয় এই খুনের সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।
অন্যদিকে এই ঘটনার জেরে হামলা চালানো হয় বামনগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের দোলুয়াখাঁকি নস্কর পাড়া এলাকায়। একদল দুষ্কৃতি ২০/২৫ টি বাড়িতে ভাঙচুর, লুঠ, মহিলাদের মারধোর করে ও হুমকি দেয়। বাড়ি থেকে সর্বস্ব লুঠ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। তাই নয় বেছে বেছে শুধুমাত্র CP(I)M কর্মী সমর্থকদের বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় তৃণমুলের নেতাদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ।
ঘটনার তদন্তে জয়নগরের বামনগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের শুট আউটের ঘটনাস্থল মরিশ্বর বাঙাল বুড়ির মোড় পরিদর্শন করলেন এডিজি সাউথ বেঙ্গল সিদ্ধিনাথ গুপ্তা, ডিআইজি প্রেসিডেন্সি রেঞ্জ আকাশ মাঘারিয়া। ঘটনাস্থলে এসে সাধারণ বাসিন্দা, পুলিশ সুপার, জয়নগর থানার আইসির সাথে কথা বলেন। তিনি আশ্বাস দেন ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে খুনিদের ধরবেন। তদন্তের স্বার্থে সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বেশ কয়েকটি মোবাইল উদ্ধার হয়েছে। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সি আইডির সাহায্য নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণেই এই খুন। এরসাথে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। এলাকা থমথমে থাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বাইট – মৃতের বাবা
বিভাস সর্দার
বিশ্বনাথ দাস
সিদ্ধিনাথ গুপ্তা
পলাশ চন্দ্র ঢালি
গ্রামবাসী