রবিবার এশিয়ান অ্যান্ড প্যাসিফিক পার্কিনসন্স ডিজিজ অ্যাসোসিয়েশন (APPA)- এর ১৩তম বার্ষিক সভায় প্রায় ১০০ জন পার্কিনসন্স রোগী, আন্তর্জাতিক স্তরের চিকিৎসক ও প্রশিক্ষকদের সঙ্গে সম্মিলিত হন। এই সংগঠনটি প্রাথমিকভাবে পার্কিনসন্স রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি, তাঁদের সহায়ক ও সঙ্গীদের সুবিধার্থে চালু হয় যার মূল উদ্দেশ্য ছিল যথাযথ শিক্ষা, দক্ষতা, নতুন তথ্য ও গবেষণার মধ্যে দিয়ে সেই রোগীদের জীবনের মানোন্নয়ন করা।
এই সম্মেলনে অংশ নেওয়া রোগী ও তাঁদের সহায়করা এই রোগের বিষয়ে, তার চিকিৎসা ও নিরাময় নিয়ে বিশ্বের তাবড় তাবড় কিছু চিকিৎসকদের থেকে সরাসরি এই বিষয়গুলি সম্পর্কে জানার সুযোগ পান। এই চিকিৎসকরা পার্কিনসন্স রোগ নিয়ে গোটা বিশ্ব জুড়ে অনবরত কাজ করে চলেছেন।
প্রসঙ্গত, ইনফিনিটি’র অন্যতম প্রয়াস ‘জাগৃতি ধাম’ শীঘ্রই নিয়ে আসতে চলেছে ‘অ্যাসিস্টেড অ্যান্ড ইন্ডিপেন্ডেন্ট লিভিং’-এর সুযোগ যেখানে প্রবীণদের জন্য থাকবে সমস্ত রকম চিকিৎসার সুবিধাও।
ইনফিনিটি’র জাগৃতি ধাম প্রবীণ আবাসিকদের যত্ন নিয়ে ‘অ্যাসিস্টেড অ্যান্ড ইন্ডিপেন্ডেন্ট লিভিং’-এর ক্ষেত্রে এক আমূল পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। তাদের এই প্রকল্পে প্রবীণ আবাসিকদের চিকিৎসা সহ তাঁদের সমস্ত সুযোগ সুবিধার প্রতি খেয়াল রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। পার্কিনসন্স রোগীদের নিয়ে এশিয়ান অ্যান্ড প্যাসিফিক পার্কিনসন্স ডিজিজ অ্যাসোসিয়েশন (APPA) এবং ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সেস কলকাতার (INK) করা সমস্ত কার্যক্রমেই সমর্থন জোগায় জাগৃতি ধাম। তাদের আবাসিকদের সমস্ত রকম সুবিধে দেওয়ার ক্ষেত্রেও তারা বদ্ধপরিকর। এছাড়া প্রবীণ আবাসিকদের জন্য সেখানে থাকছে সমস্ত সুযোগ সুবিধা এবং নির্দিষ্ট জেরিয়াট্রিক্স টিম। উল্লেখ্য, ‘অ্যাসিস্টেড লিভিং’ বলতে বোঝায় প্রবীণ আবাসিকদের জন্য সহায়কদের তরফে মেলা অধিক যত্ন ও সেবা যা তাঁরা তাঁদের অবসর পরবর্তী জীবনে পেয়ে থাকেন। জাগৃতি ধাম-ও এর ব্যতিক্রম নয়। বরং তারা ডিমেনশিয়া এবং পার্কিনসন্স রোগীদের যত্ন নেওয়া ও তাদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে নিজেদের সেরা পরিষেবা দেওয়ার অঙ্গীকার নিয়েছে।এই নজিরবিহীন প্রকল্পের মাধ্যমে ইনফিনিটি প্রবীণ আবাসিকদের যত্নের ক্ষেত্রে এক নতুন দিশা দেখাচ্ছে।
ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সেস কলকাতার ভাইস চেয়ারম্যান এবং রিসার্চ বিভাগের ডিরেক্টর ও নিউরোলজি বিভাগের প্রধান ড. হৃষিকেশ কুমার আইএনকে (INK) ও এপিপিএ-কে (APPA) সমর্থন করার জন্য জাগৃতি ধাম-এর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।
ইনফিনিটি গ্রূপের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং জাগৃতি ধাম-এর ট্রাস্টি রবীন্দ্র চামারিয়া বলেন, আগামী মাস থেকেই চালু হতে চলেছে কলকাতার প্রথম ‘অ্যাসিস্টেড অ্যান্ড ইন্ডিপেন্ডেন্ট লিভিং’। এখানে প্রবীণ আবাসিকদের জন্য থাকবে ৭২টি ঘরের ব্যবস্থা এবং পার্কিনসন্স ও ডিমেনশিয়া রোগীদের জন্যও থাকবে চিকিৎসা সহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা।
অন্যান্য যেকোনও স্নায়বিক সমস্যার তুলনায় পার্কিনসন্স-এ আক্রান্ত হয়ে শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে যাওয়া বা মৃত্যুর ঘটনা, গোটা বিশ্বেই অত্যন্ত দ্রুত হারে বেড়ে চলেছে। গত ২৫ বছরে এর প্রবণতাও প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, ২০১৯ সালে পার্কিনসন্স রোগের কারণে ৫.৮ মিলিয়ন মানুষ শারীরিক সক্ষমতা হারিয়েছেন যেই পরিসংখ্যান ২০০১ সালের তুলনায় ৮১% বেশি। এমনকি এর ফলে এই ক’বছরে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৩ লক্ষ ২৯ হাজার মানুষ।