Home » দক্ষিণ বিষ্ণুপুর মহাশ্মশানের মা করুণাময়ী কালী: ১০৮ নরমুণ্ডর পূজা ও তন্ত্র সাধনার কেন্দ্র

দক্ষিণ বিষ্ণুপুর মহাশ্মশানের মা করুণাময়ী কালী: ১০৮ নরমুণ্ডর পূজা ও তন্ত্র সাধনার কেন্দ্র

দক্ষিণ বিষ্ণুপুর মহাশ্মশানের মা করুণাময়ী কালী: ১০৮ নরমুণ্ডর পূজা ও তন্ত্র সাধনার কেন্দ্র

দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর ১ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত দক্ষিণ বিষ্ণুপুর মহাশ্মশানে অবস্থিত একটি প্রাচীন কালীমন্দির, যেখানে চিতার আগুন কখনও নিভে না। প্রায় ১১৫ বছর আগে তৈরি হওয়া এই মন্দিরের মূল দেবী “মা করুণাময়ী কালী”, তবে এই শ্মশানের ইতিহাস প্রায় চারশো বছরের পুরনো, যেখানে শ্মশান কালী পূজিত হন।

প্রাচীনকালে, এই অঞ্চলটি ঘন জঙ্গলে আচ্ছাদিত ছিল। বিষাক্ত সাপ, হিংস্র প্রাণী এবং বাঘের ভয় ছিল সর্বত্র। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এখানে জনবসতি গড়ে উঠলেও মায়ের পূজায় আজও অতিপ্রাকৃত শক্তির উপস্থিতি অনুভূত হয়। মায়ের পিছনে থরে থরে সাজানো আছে ১০৮টি নরমুণ্ড। এগুলো সাধারণ মানুষের মাথার খুলি নয়, বরং যারা অপঘাতে প্রাণ হারিয়েছে, তাদের মাথা তন্ত্র সাধনার জন্য পূজিত হয়।

মায়ের সামনে দেখা যায় পাঁচটি নরমুণ্ড দিয়ে তৈরি পঞ্চমুন্ডির আসন। এই আসনে বসে সাধকরা তন্ত্র সাধনা করেন। মন্দিরের বর্তমান পুরোহিত শ্যামল চক্রবর্তী এই পূজার পরিচালনা করেন। প্রচলিত রয়েছে, এখান থেকেই রাজা ভগীরথ গঙ্গাকে গঙ্গাসাগরে নিয়ে গিয়েছিলেন।

কালীপূজার দিনে এখানে একটি বিশেষ নিয়ম পালন করা হয়। যেদিন প্রথম যে মৃতদেহ আসে, তার আত্মার শান্তির উদ্দেশ্যে বিশেষ পূজার আয়োজন করা হয়। মৃতদেহকে ১০৮টি জবা ফুল দিয়ে স্নান করিয়ে মায়ের পায়ে নিবেদন করা হয়। শনি ও মঙ্গলবার বিশেষ দিনগুলিতে বহু দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা মায়ের দর্শন করতে আসেন, কারণ বিশ্বাস করা হয় যে মা করুণাময়ী কালী ভক্তদের ইচ্ছা পূর্ণ করেন।

এই মন্দিরে পশুবলি নিষিদ্ধ। পূজার দিন মদ, গাঁজা এবং শোল মাছ দিয়ে দেবীকে আরাধনা করা হয়। কালীপূজার সময় হাজার হাজার ভক্ত সমবেত হয় মায়ের দর্শন এবং পূজার আয়োজন উপভোগ করতে। এবছরও পূজার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে, যেখানে বহু মানুষ আসবেন মায়ের পূজা উপলক্ষে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Click to Go Up
error: Content is protected !!