পর্ণা চ্যাটার্জী, কলকাতাঃ নাবালিকা ধর্ষণ এবং ফলস্বরূপ নাবালিকার অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার মত দুর্ভাগ্য জনক ঘটনা ভারতের মত দেশে খুব প্রচলিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে সমস্ত নাবালিকা ধর্ষণের ফলে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার কারণে আপনজনের থেকে দূরে সরে যেতে বাধ্য হয়, সমাজ থেকে মুখ লুকিয়ে রাখতে বাধ্য হয় তাদের কল্যাণের জন্য নতুন প্রকল্প আনতে চলছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী স্মৃতি ইরানী সোমবার সেই কথাই ঘোষণা করেছেন। নির্ভয়া প্রকল্পের তত্ত্বাবোধনে চালু হতে চলা এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল ধর্ষণে গর্ভবতী হয়ে পড়া, সমাজ থেকে পিছিয়ে পড়া মহিলাদের আর্থিক এবং সামাজিক সুবিধা দেওয়া।
মিশন বাৎসল্যের অধীনে গৃহীত হওয়া এই প্রকল্পে বিভিন্ন রকম সুযোগ সুবিধা পাবে নাবালিকারা। ২০২১ সালে তৈরি হওয়া মিশন বাৎসল্যর মূল লক্ষ্য ছিল শিশুদের কল্যাণ করা। এই নতুন প্রকল্পে সুবিধা পাবে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত বালিকারা। এছাড়া সন্তান জন্ম দেওয়ার পর ২৩ বছর বয়স পর্যন্ত তারা সেই সুবিধা গুলি ভোগ করতে পারবে।
আর্থিক ও সামাজিক সাহায্যের পাশাপাশি আইনি সহায়তা এবং নিরাপত্তার দিকেও নজর রাখবে সরকার। এই প্রকল্পের সুবিধানুজায়ী মা ও সন্তানকে শিক্ষা নিরাপত্তা আইনি সাহায্য কাউন্সেলিং সংক্রান্ত সকল সাহায্য করা হবে। এছাড়া নাবালিকা প্রসূতি এবং তার শিশুর চিকিৎসার দিকটিও খেয়াল রাখা হবে এই প্রকল্পে।
মন্ত্রী জানিয়েছেন ধর্ষণ ও যৌন নিগ্রহের দ্রুত বিচারের আশায় দেশে ৪১৫ টি পকসো ফাস্ট ট্র্যাক আদালত তৈরি করেছে কেন্দ্র। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর রিপোর্ট অনুযায়ী ২০২১ সালে এই পকসো আদালাতে ৫১৯৬৩ টি যৌন নিগ্রহের মামলা দায়ের হয়েছে। যার ৬৪ শতাংশই পেনিট্রেটিভ কেস। এই সব কেসের ভিকটিমরাও এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন বলেই জানাচ্ছেন মন্ত্রী স্মৃতি ইরানী।
কেন্দ্র তরফে জানানো হয়েছে এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে হলে ধর্ষণের ঘটনাটি পুলিশের খাতায় নথিভুক্ত হতে হবে। সুবিধাভোগী নাবালিকাদের বিশেষ হোমে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। হোমে বসবাসকারী অন্যান্য শিশুদের থেকে তারা আলাদা থাকবেন। তাদের পরিচর্যার জন্য আলাদা কর্মী নিযুক্ত থাকবেন। তাদের জন্য প্রয়োজনীয় খরচ হোমকে পাঠিয়ে দেবে সরকার।