হ্যাঁ এতটাই সাংঘাতিক এই সংবাদ যা একমাত্র আমরাই আপনাদের সামনে আনছি।। আর কিছুদিন পরেই আমাদের দেশে স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হবে ঘটা করে।। সাম্প্রতিক কালে কেন্দ্রীয় সরকার নেতাজির মূর্তি স্থাপন থেকে শুরু করে নানান উদ্যোগ নিচ্ছেন তাকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য!! কিন্তু নেতাজি অন্তর্ধানের প্রকৃত সত্য কবে সামনে আসবে সে নিয়ে সঠিক কোন বক্তব্য নেই।।
পরাধীনতার বাঁধন ভেঙে স্বাধীনতা পেতে বলিদান হয়েছিল অজস্র প্রাণ। আর সেখানেই সবার আগে যে বীর বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামীর নাম আসে, তিনি হলেন স্বয়ং নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু। যিনি প্রথম দেশের জন্য সেনাবাহিনী তৈরী করেছিলেন যা আজও আজাদ হিন্দ ফৌজ নামে পরিচিত। এই আজাদ হিন্দ ফৌজের সাথে মুখোমুখি যুদ্ধের পরেই ব্রিটিশ সরকার পিছু হটতে শুরু করে।। কিন্তু দেশ স্বাধীন হবার মুহূর্তেই খবর আসে নেতাজি জাপানের তাইহোকু বিমান বন্দরে একটি বিমান দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।।
প্রথমদিকে এই তথ্য মানুষ বিশ্বাস করলেও পরবর্তীতে নেতাজির মৃত্যু সম্পর্কিত নানান তথ্য গুজব রটতে থাকে। কেউ কেউ মনে করতে থাকেন নেতাজি বেঁচে আছেন, কেউ কেউ তার স্ত্রী কন্যার ডি এন এ তত্ব নিয়ে তদন্ত করতে বলেন আবার কেউ ভারতের কোন প্রান্তে কোন এক অজ্ঞাত স্বেচ্ছা গৃহবন্দী এক বৃদ্ধ কেই নেতাজি বলে প্রমান করতে উঠে পড়ে লাগেন। যেখানে হিটলারের একাধিক একই রকম দেখতে দেহরক্ষী ছিলো সেখানে হিটলারের একদা প্ৰিয় বন্ধু নেতাজির একই রকম দেখতে দেহরক্ষী থাকতে পারেন সেকথা কারোর আর মনেই পড়েনা।। কেউ নেতাজি কে নিয়ে পি এইচ ডি করে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন, আবার কেউ নেতাজি কে নিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খুলে বাড়িতে বসে নেতাজি অন্তর্ধানের গবেষণা করছেন, কেউ সিনেমা বানিয়ে জাতীয় পুরস্কার পাচ্ছেন।। প্রতিবছর কলকাতা বইমেলায় নেতাজির অন্তধান নিয়ে কেউ না কেউ নতুন যুক্তি দিয়ে বই পাবলিশ করেন, আসলে নেতাজি এখন ব্যবসার এক নতুন নাম।। আর আমরা তার নির্লজ্জ অশিক্ষিত গ্রাহক হয়ে থেকে গেছি।।
এদিকে কলকাতা হাইকোর্ট এ চলা নেতাজি অন্তর্ধান মামলার একটি গুরুত্বপূর্ন নথি আমরা পেলাম আমাদের দেশের প্রতিবেশী শত্রুদেশ পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা দফতরের ওয়েব সাইটে।।
https://defence.pk/threads/files-reveal-netaji-was-alive-after-1945-family-spied-upon-mamata-banerjee.398342/page-3 এই লিঙ্ক টিতে ক্লিক করলেই আপনারাও দেখতে পাবেন সেই তথ্য। এখানে বলা হয়েছে – শুভ্র নিয়োগী নামের এক সাংবাদিক, একটি বিখ্যাত সংবাদ মাধ্যমে ২০১৫ সালের ২০শে সেপ্টেম্বর প্রকাশ করেন, ইন্ডিয়া স্মাইল নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা কলকাতা হাইকোর্ট এ এফিডেভিড করে সেখানে তারা দাবি করেন নেতাজি অন্তর্ধান মামলার বেশ কিছু নথি উধাও হয়েছিল তখনই যখন সেই ফাইল ছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের হাতেই।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ইন্ডিয়া স্মাইলের মুখ্য প্রবক্তা রাজীব সরকার টাইমস অফ ইন্ডিয়া কে একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, আমরা নথি গুলি সতর্কতার সাথে পরীক্ষা করে দেখেছি সেখানে একটি নির্দিষ্ট তারিখের পর থেকে বিশেষ একটি পরিচ্ছেদ এর অংশ একেবারেই উধাও হয়েছে যা আমরা আদালতে উল্লেখ করে অনুরোধ করেছি যে এবিষয়ে কমিশন করে তদন্ত করতে হবে কি ভাবে ও কবে এই পরিচ্ছেদ এর অংশ উধাও হলো।
কলকাতা হাইকোর্ট কে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা টি জানায় নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু কে ধ্বংস করাহয়েছে ইতিমধ্যেই। যার নথি উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনা রাজ্য সরকারের আরো এক উদাসীনতার ফল।
এছাড়াও ইন্ডিয়া স্মাইল স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রবক্তা সমাজকর্মী রাজীব সরকার, এই মামলার চারটি ফাইল দিল্লির কেন্দ্রীয় সরকারের অফিস থেকে হারিয়ে যাওয়া নিয়েও প্রতিবাদ করেছিলেন। ফাইল নম্বর – 12014/9/79-DIII(S&P) ; 12014/5/80-ISDIII ( নেতাজির গতিবিধি সম্পর্কিত ), ফাইল নম্বর S. 14/1/88-T ও S. 21/51/76-T যা জাপানের রেনকোজী মন্দিরে রাখা নেতাজির চিতাভশ্ম সম্পর্কিত এবং যা গৃহমন্ত্রী দফতরের (IS 1 division ) জয়েন্ট ডিরেক্টর সংগীতা গৈরলা ডিসেম্বর ১৯, ২০০১ সালে মুখার্জি কমিশন এ এফিডেভিডের মাধ্যমে জমা করেছিলেন।
২০১৩ সালের ৯ই জুলাই ও ৯ই সেপ্টেম্বর ২০১৩ সালে, রাজীব সরকারের করা RTI এর প্রতিউত্তরে লিখিত উত্তরে জানিয়েছেন উল্লেখিত ফাইল গুলি উধাও বা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, যার Memo no. 5890/JS(IS-1)/MHA/2013 এবং সেখানে রাকেশ সিং IS-1 ডিভিশন এর স্বাক্ষর রয়েছে যা গৈরলার সমান পদাধিকারী।
অতীতে খসলা কমিশন চলাকালীন সময়েই ফাইল গুলি কে নস্ট করা হয়েছে। ফাইল নম্বর 12(216/56-PM) নস্ট করা হয়েছে ৬ই মার্চ ১৯৭২ সালে, যার মধ্যে নেতাজির মৃত্যু সম্পর্কিত তদন্তের রিপোর্ট ছিল।। ১৯৪৫ সালের তাইহোকু বিমান বন্দরে প্লেন দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু আদৌ হয়েছিল না হয়নি সেই নিয়ে বা মুখার্জি কমিশন বা খশলা কমিশনের রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা করতে চাইনা, আগে জানতে হবে নেতাজি সংক্রান্ত কতগুলি ফাইল ছিলো বা কতগুলি আছে?? সেটাই এখন সব থেকে বড় রহস্য – জানিয়েছেন সমাজকর্মী রাজীব সরকার।
কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এর একটি নির্দেশ অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় সরকার, নেতাজি মৃত্যু রহস্য মামলায় তাদের কি ভূমিকা সেটিই পরিষ্কার করে জানাননি। এমন কি কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশন কে ৫ই জুলাই ২০০৭ এ নির্দেশ করা হয়েছিল নেতাজি সংক্রান্ত ২০২টি ফাইল দেশের জনগণের স্বার্থে ও সামনে উন্মুক্ত করেদিতে, কেন সেই নির্দেশ এখনো পালন হয়নি।।
এই সব তথ্য রয়েছে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা দফতরের ওয়েব সাইটে। যাকে আমরা শত্রু দেশ নামে চিনি।। তাদের সাইটে রয়েছে আমাদের দেশের অভ্যান্তরীণ এই তথ্য যা লজ্জা জনক।। একই সাথে প্রসঙ্গত উঠে আসছেই সমাজকর্মী রাজীব সরকারের নাম যাকে এই নেতাজি সংক্রান্ত মামলার পরেই অন্য একটি অপরাধীক মামলায় জড়িয়ে প্রথমে জেল ও পরে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছিল। এই সমাজকর্মী রাজীব সরকার নেতাজি সংক্রান্ত মামলা ছাড়াও অজস্র এমন কাজ করছেন যার ফলে দেশের প্রতিটি নাগরিক কোন না কোন কারণে উপকৃত।। অথচ এই সমাজকর্মী রাজীব সরকার কে একটি মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে তাকে আজ পিতৃ মাতৃহীন অনাথ, অসুস্থ ও বেরোজগার অর্থহীন করে তাকে মৃত্যু মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। সমাজকর্মী রাজীব সরকারের মামলা নিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল গুলিও আজ নিশ্চুপ। দায় ঠেলা ঠেলি চলছে রাজ্য আর কেন্দ্রের মধ্যে।।। ভেবে বলুন তো সত্যিই এ দায় কার?? এই লজ্জা কাদের????
সমাজকর্মী রাজীব সরকারের জীবন ও তার করা বিভিন্ন কাজ সম্পর্কে জানতে আপনারা ভিসিট করুন : https://satyamevajayate.co/