পর্ণা চ্যাটার্জী, কলকাতাঃ বাংলা বা ইংরেজি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে সবসময়ই কবিতা, নাটক, উপন্যাস সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। স্কুল লাইফ থেকে শুরু করে কলেজ জীবনে সবেতেই এই নিয়ম চলে আসছে। সিলেবাসে বেশ কিছু বিখ্যাত মানুষের লেখা থাকে তাই পড়ে তার থেকে উত্তর করতে হয়। এই প্রথা চলে আসছে বহুদিন থেকেই। তবে কোন কলেজ বা বিশ্ব বিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষার কোন সিলেবাস হয়না। সেখানে সাহিত্য সম্পর্কিত বিষয়ে যেকোনো সাহিত্য সম্পর্কিত প্রশ্ন থাকাই দস্তুর। প্রতেকেই জীবনে কমবেশি এই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন জীবনে কখনও না কখনও। তবে কখনও এমন হয়েছে পরীক্ষা হলে প্রশ্ন হাতে নিয়ে দেখা গেল আপনার নিজেরই লেখা কোনও সাহিত্য থেকে প্রশ্ন এসেছে?
শুনতে অবাক লাগলেও এটা সত্যি এমন ঘটনা ঘটেছে। পল্লী কবি জসিমুদ্দিনের নাম আমরা সকলেই শুনেছি। তিনি খুব কম বয়েসেই লেখা লেখি শুরু করেন এবং খ্যাতিও পান কমবেশি। আর্থিক কারণে পড়াশোনা সবটা সময় মত হয়নি। একটু দেরিতেই পড়াশোনা হয় তার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসেন তিনি। প্রশ্ন পত্র হাতে নিয়ে চোখ তো কপালে। প্রশ্ন পত্রে তার বিখ্যাত কবিতা ‘কবর’ থেকে প্রশ্ন এসেছে। হ্যাঁ এটাই সত্যি। ‘কবর’ জসিমুদ্দিনের বিখ্যাত কবিতার মধ্যে একটি। সেখান থেকেই প্রশ্ন আসে সেই বছর পরীক্ষায়। তারপর কী হয়েছিল বা তিনি কত নম্বর পেয়েছিল তা জানা না গেলেও এই ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়েছিল।
এই ব্যতিক্রমী ঘটনার সাক্ষী হয়েছিলেন আরও এক সাহিত্যিক। তিনি নাট্যকার বাদল সরকার। ১৯২৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। জীবনের মধ্য গগনে ১৯৯২ সালে যাদবপুর বিশ্ব বিদ্যালয়ে তুলনামূলক সাহিত্যের স্নাতকোত্তর স্তরে প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসেন। প্রশ্ন পত্র হাতে নিয়ে তিনিও অবাক। তার বিখ্যাত একটি নাটক ‘ইন্দ্রজিৎ’। সেই নাটক থেকে প্রশ্ন এসেছে পরীক্ষার খাতায়। সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তি হন তিনি। শোনা যায় অধ্যাপক প্রথম দিন ক্লাসে এসে তাকে দেখে পড়াতে অস্বীকার করেন। তিনি জানান এই রকম প্রতিভাবান একজন মানুষকে তিনি কি দেবেন! সেটা তার ধৃষ্টতা সরূপ হবে।