একের পর এক ফ্লপ ছবি তারপর করোনা কাল এবং অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের আত্মহত্যা, সব মিলিয়ে প্রায় চার বছর পর বলিউড বাদশা শাহরূখ খানের নতুন চলচ্চিত্র সদ্য মুক্তি পেল “পাঠান”, যা মুক্তি পাবার আগে থেকে এবং মুক্তি পাবার পর তৈরী করেছে একাধিক বিতর্ক।
নাম শাহরুখ খান, যাকে গোটা পৃথিবী কিং খান বা বলিউড বাদশা নামে চেনেন। বলিউডে রাজত্ব থেকে অভিনয় জগত থেকে আই পি এল ক্রিকেট টিম কেনা সব মিলিয়ে তিনি অর্থনৈতিক দিক থেকে আরবপতির থেকেও হয়তো বেশি এগিয়ে। এর সাথে আমরা সৌভাগ্যবান কারন তিনি কলকাতার ব্র্যান্ড আম্বাসাডার। যদিও তিনি এই পদে অভিষিক্ত হবার পর থেকে কলকাতার চলচ্চিত্র উৎসবে অতিথি হয়ে আসা ছাড়া, কলকাতা চলচ্চিত্র জগত বা কলকাতার জন্য কোন উন্নয়ন মূলক কাজ করেননি।
অন্যদিকে বলিউডে যাবতীয় সিদ্ধান্ত ও অর্থনৈতিক লেনদেন সব টাই চলে ভারতীয় আন্ডার ওয়াল্ডের ডন দাউদ ইব্রাহীমের ইশারায়। তথ্য অনুযায়ী করোনা কালে শুধুমাত্র মুম্বাই ফিল্ম দুনিয়া নয়, লোকসানের মুখে পড়েছিল ডি কোম্পানিও।
কারন দাউদের কালো টাকা নিবেশের মূল ব্যাবসা গুলির মধ্যে প্রধান দুটি হল প্রপার্টি ও বিনোদন জগত। আর এই দুটি ব্যাবসাই মুখ থুবড়ে পড়েছিল।
বলিউডে খানেদের দাপট অর্থাৎ শাহরূখ, সালমান ও আমীর খানের প্রভাব এতোটাই বেশী যে সেখানে বলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি টা তাদের ইশারাতে চলে যে অভিযোগ ওঠে অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের রহস্য জনক আত্মহত্যার পিছনেও এই খান ত্রয়ীদের যোগ থাকতে পারে। সেই সময় থেকেই এই খান পরিবার ও তাদের সিনেমা কে বয়কটের ডাক দেয় দেশের এক বিশেষ রাজনৈতিক দলের সমর্থকরা। সেই বয়কটের দাপটে অনান্য বেশ কিছু বলিউড ফিল্ম, একের পর এক মুখ থুবড়ে পড়তে থাকে। প্রযোজকদের কপালে লোকসানের ধাক্কায় ঘামের বিন্দু জমতে থাকে।
এর সাথেই আমীর খান প্রযোজিত ও অভিনীত ” লাল সিং চাঢ্ঢা ” সিনেমা টিও বক্স অফিসে আচঁড় না কাটতে পেরে লোকসানের মুখ দেখে। অজানা কারনে আমীর খান ও অভিনয় থেকে বিরতি ঘোষনা করেন।
সালমান খান বিগবস নিয়ে ব্যাস্ত থাকলেও স্বয়ং কিং খান ঘোষনা করেন তার ছবি পাঠান , সাথে বলেন “দেখি কার ক্ষমতা পাঠান কে বয়কট করে “!!!!!
মুক্তি পাবার আগে টিজার রিলিজ হবার সাথে সাথে সামাজিক মাধ্যমে আরো এক বিতর্ক তৈরী হয় এই সিনেমার গানে অশালীন পোষাক পরার কারনে। কিন্তু শাহরুখ অনুগামী ( পড়ুন শাহরুখ পাগল ) -রা পাঠান-এর হুকুমে সেসব অগ্রাহ্য করেন। কলকাতা জুড়ে পাঠান-এর দাপটে পথে নামেন বাংলার পাঠান অনুগামীরা আর এর সাথে সাথেই বাংলার সব হল থেকে নেমে যায় জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালকের সিনেমা মায়া কুমারী সহ একাধিক বাংলা ছবি।
সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয় কলকাতা তথা বাংলা চলচ্চিত্রের অভিনেতা অভিনেত্রীদের বাদশার এই হুকুমের বিরোধীতা। কৌশিক গাঙ্গুলী, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় সহ অনেকেই বিরক্তি প্রকাশ করেন। তাদের মুখে শোনা যায় মুম্বাই থেকেই নাকি পাঠান-এর হুকুম এসেছে, যে হলে পাঠান চলবে সেই হলে অন্য কোন সিনেমা চলবেনা।
এরপর দেখাযায় হলের বাইরে উপচে পড় ভীড়। টিকিটের আকাল ও গগনচুম্বি তার দাম। হলের ভীতরে থিক থিক করছে ভিড়। সব শো হাউস ফুল। এডভান্স বুকিং এও অমিল টিকিট। বাঙালির পাঠান না দেখলে জাত চলে যাবে এমনই হাল। কিন্তু সত্যিই কি ব্লকবাস্টার হয়েছে বাদশা? আমাদের কাছে এসে পৌঁছেচে একদমই বিপরীত মুহুর্তের ভিডিও।
আসলে অর্থ বলে সব কিছুই সম্ভব। যেভাবে নিরাকার গল্পহীন দক্ষিনী চলচ্চিত্র গুলি শুধুমাত্র প্রমোশনের জোরেই বক্স অফিসে ব্যাবসা করছে সেভাবেই পাঠান-ও তার অন্যায় রাজত্ব চালাচ্ছেন।