বহতা নদী সরকার
২১ বছর বয়সী আবু সিদ্দিকী হালদার। চোর সন্দেহে বাড়ি থেকে তাকে থানায় তুলে নিয়ে মারধোর করেছে পুলিশ। প্রধান অভিযুক্ত এসআইয়ের নাম রাজদীপ সরকার। ১ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা উৎকোচের বিনিময়ে আবু সিদ্দিকের বাবা ছেলের জামিন করাতে পুলিশের সঙ্গে রফা করেন। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। পুলিশি নির্যাতনে অসুস্থ অবস্থায় জামিনে মুক্তির পর তিনটি সরকারি হাসপাতাল ঘুরে শেষে একটি নাসিংহোমে ভর্তি করা হলে রাতে তার মৃত্যু হয়। পুলিশের অমানবিক নির্যাতনে ধৃত যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে সিদ্দিকীর পরিবার। এদিকে পুলিশের দাবি, আদালতে পেশ করার সময় আবু সিদ্দিকীর কোনও শারিরীক সমস্যা ছিল না। পরিবারসহ গ্রামবাসীরা থানার সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখায়।
ঘটনা দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার ঢোলাহাট থানার পুলিশ ১ জুলাই মধ্যরাতে আবু সিদ্দিকী হালদারসহ আরেক যুবকে চোর সন্দেহে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। তারপর চলে অমানবিক নির্যাতন, এমনকি তাকে ইলেকট্রিক শকও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ৪ জুলাই তাকে আদালতে পেশ করা হয়। জামিন হয় আবু সিদ্দিকীর। জামিনের পর হাঁটতে না পারায় তাকে কোর্ট থেকে কোলে করে নিয়ে আসতে হয় বলে জানান আবু সিদ্দিকীকের এক আত্মীয়। তখন তার রক্তবমি হচ্ছিল। শরীর ছিল অত্যন্ত দুর্বল । পেটে ও বুকে ব্যথা ছিল বলে জানান তিনি।
আবু সিদ্দিকীর মা জানান, ছেলের সারা শরীরের ব্যথা ছিল। মারধোরে শরীর ফুলে গিয়েছিল। আমার সামনেও পুলিশ তাকে খুব মারধোর করেছে।
আবু সিদ্দিকীর কাকা জানান, পুলিশ অনেক মারধোর করেছে আমার ভাইপোকে। অসুস্থতার কারণে উন্নত চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকাও দেয় পুলিশ। তার শরীর এত খারাপ ছিল যে তিনটি সরকারি হাসপাতাল তাকে ভর্তি নেয়নি। শেষ পর্যন্ত ভর্তি করানো হয় একটি নার্সিংহোমে। সেখানেই রাতে তার মৃত্যু হয়। সিদ্দিকীর মৃত্যুর পর পুলিশের ৫০ হাজার টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ জানান, যখন সিদ্দিকীকে নিয়ে আসা হয় তখন তার অবস্থা সিরিয়াস ছিল। রক্তবমি হচ্ছিল। সঙ্গে ছিল শ্বাসকষ্ট। বেশকিছু টেস্ট করা হয়, ওষুধপত্র দেওয়া হয়। শেষপর্যন্ত রাত নটার দিকে পেসেন্ট মারা যায়।
আবু সিদ্দিকের এক আত্মীয় হাসপাতাল থেকে জানান, ‘তার বুকের ওপর চারজন উঠে দাঁড়িয়েছিল। নির্যাতনে তার দুটো কিডনীই নষ্ট হয়ে গেছে।
ফ্যাশন ডিজাইনার, আসানসোল দক্ষিণ থেকে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য এবং বিজেপি মহিলা মোর্চার পশ্চিমবঙ্গ ইউনিটের সভাপতি সিদ্দিকী কাণ্ডে অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, পুলিশ টিএমসির ক্যাডার হয়ে কাজ করছে। পুলিশ সিড়দাঁড়া সোজা করে কাজ করছে না। মমতা ব্যানার্জি সরকার যেভাবে কাজ করতে বলছে টিএমসির সেভাবে কাজ করছে। তারা বিজেপির কর্মীদের তুলে এনে থানায় ঢুকিয়ে মারধোর করা এবং শেষপর্যন্ত মেরে ফেলা অব্দি তারা যাচ্ছে।