হ্যা ঠিকই পড়েছেন। এই কঠিন বাস্তব কথা গুলি প্রথম সারির সংবাদ মাধ্যমরা লিখবে না। আজ আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবসে গুগুল ডুডল বানাবে না। ফেসবুক নোটিফিকেশন দেবেনা। কেউ আপনাকে পুরুষ দিবসের শুভেচ্ছাও জানাবে না। অথচ আন্তর্জাতিক মহিলা দিবসে গুগল, ফেসবুক থেকে সমাজের প্রতিটা ক্ষেত্রেই একটা অঘোষিত উৎসব পালন করা হয় আর নতুন করে পুরুষ সমাজ কে নানান রকমের নারী নির্যাতনের অভিযোগে কাঠগোড়ায় দাঁড় করানো হয়।।
জানি মানতে কষ্ট হবে, তবে মেনেনিন আপনি একজন নিপিড়ীত পুরুষ। ভেবে দেখুন পাবলিক বাসে বা অটোতে আপনার পাশে যদি কোন মহিলা বসেন বা ভীড়ে দাড়ান তখন আপনি ঠিক কতটা আতঙ্কিত থাকেন! কারন আপনি জানেন বাস বা অটো অতিরিক্ত দুলে উঠলেই আপনার পাশে দাঁড়ানো মহিলা চিৎকার চেচামেচি করে আপনাকে শ্লীলতাহানির দায় চাপিয়ে অপদস্থ করবে। সেখানে আপনার কোন কথা আপনার পাশে দাঁড়ানো দশজন পুরুষ শুনবে না। সবাই ওই মহিলার কথা শুনেই আপনাকে অপমান করবে পারলে হাতের আরামও করে নেবে। শুধুমাত্র পথে ঘাটেই নয়। বর্তমান সমাজে আপনি আপনার বাড়িতে, বিবাহিত জীবন বা প্রেমের জীবনেও নিরাপদ নন।
পুরুষের কাঁদতে নেই। পুরুষের কষ্ট হয়না। পুরুষ ধর্ষিত হয়না। এগুলোই এখন স্তম্ভ হয়ে দাড়িয়েছে। হ্যা পুরুষও কাঁদে, পুরুষেরও কষ্ট হয়, হ্যা বিশ্বাস করুন পুরুষরাও ধর্ষিত হয় কিন্তু মজার বিষয় হল থানায় অভিযোগ করলে তা চট করে গ্রাহ্য হয়না। ধর্ষিত পুরুষ কে সমবেদনা জানায় না বরং ঠাট্টা তামাশা করে তাকে আবারও মানসিক ধর্ষন করে সমাজ।
আমাদের দেশের আইন ব্যাবস্থাও একপেশে। সতীদাহ প্রথার পর এমন সমাজসংস্কার হল যে বৃটিশ দের পর ভারতীয় নারীদের সুরক্ষার নামে যাবতীয় আইন নারী সুরক্ষার কথা ভেবেই তৈরী হল। তৈরী হল মহিলা কমিশন। বেশকিছু পাড়ায় মহিলা সমিতিও আছে। এই সবকিছুই পুরুষ জাতির বিরুদ্ধে। কোন কারনে আপনি কোন মহিলার সাথে প্রেমের সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলে খুব সহজেই আপনার বিরুদ্ধে আসবে- বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে, সহবাস ও প্রতারনার আইনি অভিযোগ। অথবা আপনার নব্য বিবাহিত স্ত্রীর হঠাৎ মুড হলো যে উনি এই সংসার করবেন না, আপনার ও আপনার পরিবারের বিরুদ্ধে খুব সহজেই থানায় দায়ের হবে স্ত্রী নির্যাতনের আইনি অভিযোগ। এই দুই ক্ষেত্রেই পুরুষের দিকের আইন খুব দূর্বল। আপনার অর্থাৎ পুরুষের কোন কথা না শুনেই আপনাকে ও আপনার পরিবারের সকলকে, প্রয়োজনে বৃদ্ধ বাবা মা সহ ভাই বোন সকলকেই পুলিশ গ্রেফতার করতে পারে। স্বাভাবিক ভাবেই আপনার স্ত্রীর আইনজীবী আপনার বিরুদ্ধে মোটা অঙ্কের খোরপোশের মামলা করবে যা অনাদায়ে অর্থাৎ আপনি না দিতে পারলে আপনার জেল হাজতবাস হবে এবং আপনার ও আপনার পরিবারের সামাজিক সম্মানহানি নিশ্চিত। সাম্প্রতিক কালে বেশ কিছু নারীর এটাই নেশা ও পেশা হয়ে দাড়িয়েছে। বর্তমানে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলার সংখ্যা মাত্রাতিরিক্ত ভাবে বেড়ে চলেছে এই একই আইনের অনৈতিক আস্ফালনে। সাম্প্রতিক কালে ভারতে যত আত্মহত্যা হয়েছে তার সমীক্ষায় দেখাগেছে সেখানে পুরুষের আধিক্য বেশী এবং তার মধ্যে বেশীর ভাগই নারীদের হাতে নিপিড়নের শিকার। এবং এই কারনেই বর্তমানের যুব পুরুষ সম্প্রদায় প্রেম বা বিবাহের সম্পর্কে আবদ্ধ হতেই চাইছে না। কারন মনে রাখবেন নারীদের পুরুষ সঙ্গী পরিবর্তন করার স্বাধিকার আছে যা পুরুষের ক্ষেত্রে হয়ে দাড়ায় দুশ্চরিত্রের লক্ষন।
এখানেই শেষ নয়, একটি সমীক্ষায় এও উঠে এসেছে যে ভারতে প্রতিনিয়ত যত ধর্ষনের মামলা দায়ের হয় তার ৭৫% মিথ্যা যা প্রমান হতে লেগেযায় বছরের পর বছর। বিনা কারনে বা মিথ্যা ধর্ষনের অভিযোগে দশ বা বিশ বছর জেল হাজত বাস করেছেন বহু ভারতীয় পুরুষ যা নিয়ে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম বেশ কিছুবার লেখালিখি করেছে। কিন্তু সেখানেই ইতি। নতুন করে আইন প্রনয়ন নিয়ে কোন সরকারের সদিচ্ছা নেই। কারন সমাজ থেকে কর্পোরেট জগতের বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মুল গ্রাহকই হল নারী জাতি। কেউ নিজের ব্যাবসা নষ্ট করতে চায়না।
ভারতের পথে ঘাটে আপনি যত্রতত যা ইচ্ছা করতে পারবেন না। কিন্তু বর্তমানে কিছু নারী সামাজিক মাধ্যমে টাকা উপার্জনের জন্য চরম অশ্লীল ভিডিও তৈরী করে যাচ্ছেন। কিন্তু কোন প্রতিবাদ নেই। কিন্তু আপনি বা কোন পুরুষ এই জাতীয় কিছু করলে আপনার তার বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের হবেই। কারন স্যান্ডি সাহা নাইটি পরে মাঝ রাস্তায় নাচলে তাকে পুলিশ ডেকে পাঠায় অথচ অন্তরবাস পরে মহিলারা সামাজিক মাধ্যমে ভ্লগ করলে তার কোন শাস্তি হয়না।
সময় হয়েছে একদেশ এক আইন প্রনোয়নের। নারী সুরক্ষার পাশাপাশি পুরুষাধিকার আইন প্রয়োজন। প্রয়োজন মহিলা কমিশনের সাথে পুরুষ কমিশন। খোরপোশ এর মতো নোংরা আইন অবিলম্বে স্থগিত করা উচিত কারন আজকের নারীরা আর অশিক্ষিত নয়, বেকার নয়। তারা আজ স্বাবলম্বী হয়েছে। নতুবা আগামীদিনে পুরুষের আত্মহত্যার সংখ্যা আরো বাড়বে এবং অকালে ঝরে যাবে নিরীহ কিছু প্রান। তবে আমরা বলছিনা ব্যাতিক্রমী ঘটনা নেই। তবে পুরুষ নির্যাতন ক্রমেই বৃদ্ধি পেয়েছে বহুগুন। পুরুষদের সচেতন হতে হবে। সরকারের কাছে নতুন আইনের দাবী করতে হবে সেই অঙ্গীকার নিয়েই আজ পালিত হোক আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস।