Soumen D : ছোটবেলার একটা ঘটনা এখনো বেশ মনে আছে । তখন আমরা ক্লাস ফোর বা ফাইভে পড়ি । একদিন হঠাত স্কুলে খুব হইচই পড়ে যায়। পুলিশ ও এসে গেছে । হেড সারের ঘরে উঁকি দিয়ে জানতে পারলাম দুজন ”দাদা” কে ধরে আনা হয়েছে কারণ তারা আমাদের স্কুলের সামনে সিনেমার টিকিট বিক্রি করতে এসেছিল। পরে আরও জানতে পারলাম সিনেমা টির নাম ছিল ”ভোম্বোল সর্দার” । একটি শিশু চলচিত্র । তারপর স্কুল কমিটি বন্ধ দরজার পিছনে কি আলোচনা করেছিল জানতে পারিনি কিন্তু তার পরেই স্কুল থেকে ঐ সিনেমা টি সকল ছাত্র দের কে ডেখাণো হবে বলে ঘোষণা করা হয় । এখনও মনে আছে আমাদের সকল কে লাইন দিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কারণ তখন কার সাধারণ বাঙলা মিডিয়াম স্কুলের গাড়ী ভাড়া করার ও পয়সা ছিল না ।
বাঙলার সোনালী দিন আজ অতীত। বিতর্ক সভার আলোচনার বিষয় বস্তু হয় – বাঙালী কে এবার বাঘের মত সংরক্ষণের প্রয়োজন । আর এই বিতর্ক সরাসরি সগর্বে সম্প্রচার করে আনন্দ দেয় আরও একটি বাঙালী বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল। বর্তমানে বাঙালী তাদের সন্তান কে বাঙলা মিডিয়াম স্কুলে পাঠাতেও লজ্জা পায়। বাঙলার যুব সমাজের মূখে থাকে এক অদ্ভুত ভাষা, নাতো হিন্দি না ইংলিশ । পাড়ায় পাড়ায় খুলে গেছে বিদেশী ভাষা শেখার স্কুল। বাঙালীর জাতীয় পোষাক ধূতি- পাঞ্জাবী পড়ে পাঁচ তারা হোটেল বা মলে ঢুকতে দেয়না প্রহরীরা। এমনকি বাঙলা সিনেমা হলে ৩ দিনের বেশী থাকে না । বাঙালী বাঙলা চলচিত্র দেখতে পছন্দ করে না। তাই বাঙলা যে তার বাঙালিয়ানা ও তার সাথে তার সোনালী দিনের গৌরব হারিয়েছে তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখেনা। তাই বাঙালীর বাঙালিয়ানা আর ঐতিহ্য ফেরাতে উদ্যোগী হল অবাঙালী বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান কুচিনা হোম মেকারস প্রাইভেট লিমিটেড আর তার সাথে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে এগিয়ে এলো স্প্রাত্তলিং ক্যামপাস। বাকি বাঙালী বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান রাজ্যে থাকলেও তারা এই সব চিন্তা ভাবনা মাথায় আনে না ।
বেশ কিছু বছর ধরেই বাঙলা সিনেমা, হলে মাছি ছাড়া মানুষ দেখতে যায়না । তাই গতকাল inifd Lindsay steet এ হয়ে গেল ”ইস্কুলে বায়স্কোপ” এর অফিসিয়াল পোস্টার উদ্বোধন। এবার স্কুলের ছাত্র ছাত্রী দের স্কুলেই দেখানো হবে বাছাই করা বাংলা সিনেমা । যা দেখে বাঙালি ছাত্র ছাত্রী দের মধ্যেয় ফিরবে বাংলার সংস্কৃতি ও বাঙালিয়ানা । যে সকল ছাত্র ছাত্রীরা বাংলা ভাষা তে দুর্বল তাদের ও অনেক টাই বাংলা শিখতে সাহায্য করবে এই উদ্যোগ এমনটাই জানালেন কুচিনা হোম মেকারস প্রাইভেট লিমিটেড এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর শ্রী নমিত বাজোরিয়া ও অনুষ্ঠানের অন্যতম প্রধান আয়োজক শ্রী কৌশিক চক্রবর্তী। তাঁরা আরও জানান এই উদ্যোগ টি তাঁরা ২০১৭ সাল থেকেই ভাবতে শুরু করেছিলেন যা এবার বাস্তবায়িত হল । আপাতত ২০ টি বেসরকারি স্কুল এই উদ্যোগে সামিল হয়েছে বলেও তাঁরা জানান।