প্রায় ২৭ বছর পর দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে ঐতিহাসিক জয় অর্জন করেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। ৭০ আসনের মধ্যে বিজেপি ৪০টি আসনে জয়লাভ করেছে, যা সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যার চেয়ে ৪টি বেশি। অপরদিকে, আম আদমি পার্টি (আপ) ১৭টি আসনে সীমাবদ্ধ রয়েছে। কংগ্রেস এবারও কোনো আসন জিততে পারেনি।

বিজেপির এই জয় দিল্লির রাজনীতিতে একটি বড় পরিবর্তন নির্দেশ করে, যেখানে আপের প্রতিষ্ঠাতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া উভয়েই তাদের আসন হারিয়েছেন। নয়াদিল্লি আসনে কেজরিওয়াল বিজেপি প্রার্থী প্রবেশ ভার্মার কাছে ৪,০০০-এরও বেশি ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। জংপুরা আসনে সিসোদিয়া বিজেপির তরবিন্দর সিং মারওয়াহের কাছে ৬৭৫ ভোটে পরাজিত হন। তবে বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী আতিশী কালকাজি আসনে ৩,৫৮০ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন।

বিজেপির এই জয় প্রধানমন্ত্রী মোদির জন্য একটি বড় সাফল্য, বিশেষ করে গত বছরের জাতীয় নির্বাচনে সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পর। এই ফলাফল মোদির রাজনৈতিক অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে এবং আসন্ন আন্তর্জাতিক বৈঠকগুলোতে তার প্রভাব বৃদ্ধি করবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

বিজেপির প্রচারাভিযানে মধ্যবিত্ত ভোটারদের আকৃষ্ট করার জন্য বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে মহিলাদের জন্য আর্থিক সহায়তা, প্রবীণ নাগরিকদের জন্য পেনশন এবং যুবকদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ উল্লেখযোগ্য। এছাড়া, সাম্প্রতিক কর ছাড়ের ঘোষণাও মধ্যবিত্তের মধ্যে বিজেপির সমর্থন বাড়িয়েছে।
অপরদিকে, আপের নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এবং গ্রেপ্তারি তাদের জনপ্রিয়তায় প্রভাব ফেলেছে। কেজরিওয়াল গত বছর ঘুষের অভিযোগে গ্রেপ্তার হন, যা তিনি অস্বীকার করেছেন। তবে এই ঘটনা তার দলের ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

এই নির্বাচনের ফলাফল দিল্লির রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে, যেখানে বিজেপি দীর্ঘদিন পর ক্ষমতায় ফিরে এসেছে এবং আপের প্রভাব হ্রাস পেয়েছে।