পর্ণা চ্যাটার্জী, কলকাতাঃ আজ কুরবানি ঈদ। মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের কাছে আজ এক উৎসব। আজ সকাল থেকেই ফেসবুক জুড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে কিছু ছবি বা লেখা। মানুষ শেয়ারও করছেন সেই সব লেখা। লেখাগুলি অবশ্যই মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে। আজ কুরবানি ঈদে পশু কুরবানি করা হবে, তাই আজ হিন্দুরা পশুপ্রেম দেখাতে তৎপর হয়েছে। এছাড়া বিরিয়ানি খেলে হিন্দুত্ব থাকবে না এমন কথাও দেখা যাচ্ছে।
হিন্দু সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ আজ সকাল থেকে ফেসবুকে শেয়ার করে চলেছে বিরিয়ানি খাওয়া মানুষরা নাকি প্রকৃত হিন্দু নয়। কিন্তু বিরিয়ানি কি আজ আর মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমিত আছে? বিরিয়ানির সৃষ্টি মুসলিমদের হাত ধরে এটা সত্যি কিন্তু এখন তো হিন্দু মুসলিম সব সম্প্রদায়েরই উৎসব থেকে দিনযাপন সবেতেই মিশে গেছে বিরিয়ানি। বাঙালি বিয়েবাড়ির বেনুতে বিরিয়ানি এখন অবিচ্ছেদ্য অংশ। সেই বিরিয়ানি খেলে হিন্দুত্ব রক্ষা হবে না এমন কথা বোধহয় কারোর ভাবাটা ঠিক না।
যেকোনো দেশেই দুটি আলাদা জাতির মানুষ পাশাপাশি অবস্থান ক্রুক না কেন তাদের মধ্যে কিছু সম্প্রীতি কিছু বিবাদ ঘটবেই। হিন্দু মুসলিম রায়টের কথা যেমন শোনা যায় তেমনই হিন্দু মুসলিম সম্প্রীতির কথাও শোনা যায় খুবই। আজ ঈদের দিনে কিছু মানুষ যেমন এইসব পোস্ট শেয়ার করছে তেমন অনেক মানুষ তার মুসলিম বন্ধুটার বাড়িতে আজ ঈদের নিমন্ত্রণ খেতেও যাবে।
আর পশুবলি? সে তো দুই ধর্মের মধ্যেই রয়েছে, একে অপরকে নিন্দা করে কি লাভ সেখানে? মানুষ নিজের খাওয়ার রোজ পশু হত্যা করছে সেটা নিয়ে কথা হয়না অথচ কোন ধার্মিক কারণে সেটা ঘটলেই আলোচনা শুরু হয়ে যায়। সব ধর্মেরই কিছু নির্দিষ্ট সংস্কার এবং কুসংস্কার রয়েছে, তাই ওপরের ধর্মকে ছোট করার চেষ্টা না করাটাই বোধহয় ভালো। আর রইল পড়ে খাবারের কথা? বিরিয়ানির কথা? খাবারকে জাতপাত ধর্ম বর্ণ এসবে না ফেলাই ভালো। রেস্টুরেন্টে গিয়ে যখন চাইনিজ, ইটালিয়ান বা কোরিয়ান খাবার অর্ডার করা হয় তখন কি মানুষ হিন্দু মুসলিম এগুলো মনে রাখে? তাই কোন খাবারকেই কোন সাম্প্রদায়িকতায় বেঁধে দেওয়াটা বোধহয় ঠিক না।