কলকাতা: নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরুর আগেই ফের একবার বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলির বেতন বৃদ্ধি নিয়ে তীব্র অসন্তোষ ছড়িয়েছে অভিভাবকদের মধ্যে। প্রতি বছর লাগামহীনভাবে স্কুল ফি বাড়ানো হলেও, তার কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই বলেই অভিযোগ উঠছে। এবারও একাধিক নামী স্কুল তাদের টিউশন ফি, উন্নয়ন ফি ও অন্যান্য খরচ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়িয়েছে, যা মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত অভিভাবকদের জন্য বাড়তি বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ফি বৃদ্ধির হার কত?
অভিভাবকদের অভিযোগ, বেশিরভাগ স্কুল ১০-২৫% পর্যন্ত ফি বৃদ্ধি করেছে। কেউ কেউ বার্ষিক উন্নয়ন ফি, ল্যাবরেটরি চার্জ, এবং অতিরিক্ত পরিষেবার খরচ উল্লেখ করে অভিভাবকদের কাছ থেকে মোটা টাকা দাবি করছে। বিশেষ করে, নামী ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলির ক্ষেত্রে ফি বৃদ্ধির পরিমাণ আরও বেশি।
একজন অভিভাবক, যিনি কলকাতার একটি নামী বেসরকারি স্কুলে তার সন্তানকে পড়াচ্ছেন, তিনি বলেন, “প্রতি বছরই স্কুল ফি বাড়ে, কিন্তু এবারের বৃদ্ধির হার অবিশ্বাস্য! আমাদের আয় তো বাড়েনি, তাহলে এই অতিরিক্ত চাপ কীভাবে সামলাব?”
রাজ্য সরকারের ভূমিকা কী?
ফি বৃদ্ধির এই লাগামহীন প্রবণতা রুখতে রাজ্য সরকার এখন পর্যন্ত তেমন কোনো কঠোর পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ উঠছে। যদিও পশ্চিমবঙ্গ সরকার কিছু বছর আগে বেসরকারি স্কুলগুলোর ওপর একটি বিধি-বিধান প্রণয়নের কথা বলেছিল, কিন্তু এখনো তা পুরোপুরি কার্যকর হয়নি।
শিক্ষা দফতরের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, “আমরা বিষয়টি নিয়ে অভিভাবকদের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। খুব শীঘ্রই আমরা একটি পর্যালোচনা বৈঠক করব এবং প্রয়োজনে ফি নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে নতুন নির্দেশিকা আনা হতে পারে।”

অভিভাবকদের প্রতিবাদ ও বিকল্প পথ
এই অবস্থায় বেশ কিছু অভিভাবক সংগঠন প্রতিবাদে নেমেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্যাম্পেইন থেকে শুরু করে স্কুলের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিও দিচ্ছেন অনেকেই।
অভিভাবকদের একাংশের মতে, সরকারের উচিত বেসরকারি স্কুলগুলোর ওপর নির্দিষ্ট নিয়ম চালু করা, যাতে তারা নিজেদের ইচ্ছে মতো ফি বাড়াতে না পারে। পাশাপাশি, অনেকেই সরকারি ও আধা-সরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের সংখ্যা বাড়ানোর দাবি তুলছেন, যাতে মধ্যবিত্তরা ভালো শিক্ষার সুযোগ পায়।
শেষ কথা
বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোর ফি বৃদ্ধি নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে, তা দ্রুত সমাধান না হলে আগামী দিনে আরও বড় আন্দোলনের রূপ নিতে পারে। এখন দেখার বিষয়, রাজ্য সরকার কত দ্রুত এবং কী ধরনের পদক্ষেপ নেয় এই সমস্যা সমাধানে।