এ যেন অপরাধ জগতের আস্তখনি খুঁজে পেয়েছেন তদন্তকারী অফিসাররা। কিছু দিন আগেই জনৈক দ্বীপান্বিতা দাস দত্ত নামক এক মহিলার থেকে প্রায় ৬ লক্ষ টাকা প্রতারনা করার অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন বরানগর কালীতলা লেনের বাসিন্দা জয়ন্ত দাশগুপ্ত, যিনি সামাজিক মাধ্যমে জেডিবুড়ো নামে বিখ্যাত। সম্প্রতি মহামান্য বিচারপতি তার জামিনের আর্জি খারিজ করে পুলিশি হেফাজত থেকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
জানা যাচ্ছে, তদন্দকারী পুলিশ আধিকারিকরা জয়ন্ত দাশগুপ্তের বিরুদ্ধে তদন্ত করে বিগত বছরের রেকর্ড থেকে ১১০ টি অভিযোগ খুঁজে পেয়েছেন যার মধ্যে ৩২টি অভিযোগ গুরুতর অভিযোগ হিসাবে খুঁতিয়ে তদন্ত করা হতে পারে এবং সেই অভিযোগ গুলি মহামান্য বিচারপতির আছে তদন্দকারী অফিসাররা দিতেই তার জামিনের আর্জি বাতিল হয়। কি ছিল সেই গুরুতর অভিযোগ?
জানা যাচ্ছে, বরানগরের কালীতলা লেনের, কেবল ব্যাবসায়ী জয়ন্ত দাশগুপ্ত সামাজিক মাধ্যমে নিজের নাম “জেডিবুড়ো” করে গ্ল্যামার জগতের হাতছানিতে উঠে আসা নবাগত মডেল, মেকাপ আর্টিস্ট ও ফটোগ্রাফারদের কাছে নিজেকে গডফাদার তৈরী করে ফেলেছিলেন। সামাজিক মাধ্যমে AITAA, জলশাঘর ও Respect Police নামে কিছু পেজ ও গ্রুপ খুলে প্রায় ১লক্ষ সদস্য জোগাড় করে ফেলেছিলেন। রাজ্যের শাষকদলের প্রথম সারির প্রবাবশালী নেতাদের, সেনাবাহিনীর অফিসার, কলকাতা পুলিশের কিছু আধিকারিকের, বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের নেতৃত্বদের তার অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়ে তাদের সাথে সাথে সেল্ফি বা নিজ্স্বী ছবি তুলে সাধারন মানুষ ও গ্ল্যামার জগতে আসা নবাগত যুবক যুবতীদের ওপর প্রভাব বিস্তার করতেন।
জয়ন্ত দাশগুপ্তের এই ভাবমূর্তি কে বিস্বাস করতেন সকলেই। অনেক যুবক যুবতীই নাকি এই জয়ন্ত দাশগুপ্ত কে “বাবা” বলেও সম্বোধন করতেন। আর এই অন্ধ-ভক্তির পিছনেই চলতো নাকি পর্ন ফিল্মের ব্যাবসাও। তদন্তে উঠে এসেছে এরকমই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
যদিও বেশকিছু মহিলা সামাজিক মাধ্যমে ইতিমধ্যেই মুখ খুলতে শুরু করেছেন। তারা প্রকাশ্যে বলেছেন জয়ন্ত দাশগুপ্ত বা জেডিবুড়ো কিভাবে তাদেরকে যৌন হ্যানস্থা করতেন। কিভাবে তাদেরকে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হবার জন্য প্ররোচনা দিতেন।
জয়ন্ত দাশগুপ্তের মোবাইল থেকেই সম্ভবত পাওয়া গেছে দুটি ব্যাক্তিগত মাইক্রো ওয়েবসাইট লিঙ্ক। যেখানে অনলাইনে মোটা অঙ্কের টাকা দিলেই পছন্দের মহিলারা অনলাইনে নগ্ন বিনোদন সহ আরো অনেক পরিসেবা দিয়ে থাকেন। এছাড়াও তার মোবাইল ফোন থেকে পাওয়া গেছে বেশ কিছু মহিলার আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও। এই ব্যাবসায় জয়ন্ত দাশগুপ্তের সাথে জড়িত বেশ কিছু মহিলাকে তদন্তের আওতায় আনা হতে পারে বলেই যানা যাচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে এর বেশী কিছুই বলতে চাইছেন না তদন্তকারী আধিকারিক। তাহলে কি জয়ন্ত দাশগুপ্ত বা “জেডিবুড়ো” আন্তর্জাতিক পর্নফিল্মের দুনিয়াতেও জড়িয়ে আছেন?