পর্ণা চ্যাটার্জী, কলকাতাঃ বাংলায় একটা প্রচলিত লোককথা হচ্ছে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে প্রেমিক-প্রেমিকা একসঙ্গে গেলে তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এই কথার সত্যতা প্রমাণ করে হাজার হাজার বাঙালি তরুণ তরুণী, যুবক-যুবতীরা। যদিও কথাটা প্রেমিক প্রেমিকা নিয়ে প্রযোজ্য। স্বামী স্ত্রী কে এমন ধারণা প্রচলিত হয়নি এখনও। তবে বাংলায় না থাকলেও জাপানে রয়েছে একটি ৬০০ বছরেরও পুরনো বৌদ্ধ মন্দির যা বিবাহবিচ্ছেদ মন্দির বা ‘Divorce Temple’ নামে পরিচিত।
জাপানের কামাগাওয়া প্রদেশের কামাকুরু শহরে অবস্থিত এই মন্দিরটি। ৬০০ বছরেরও অধিক পুরনো এই মন্দির জাপানের ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলির মধ্যে একটি। ‘মাৎসুগাওকা টোকেই –জি’ খ্যাত এই মন্দির স্থানীয় ভাষায় ‘এনকিরি ডেরা’ নামে পরিচিত। যার অর্থ বিচ্ছেদের মন্দির বা Divorce Temple। কিন্তু একটি মন্দিরের এমন নামকরণ কেন? এই মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এমনই এক ইতিহাস।
আজ থেকে বহু বছর আগে জাপানে বিবাহবিচ্ছেদের কোনও নিয়ম ছিল না। মহিলাদের স্বামী ছেড়ে দেওয়ার অধিকার তো ছিলই না। কিন্তু অত্যচারের শিকার হয়ে যে সমস্ত মহিলা স্বামী ছাড়তে বাধ্য হতেন, তারা আশ্রয় পেতেন এই মন্দিরে। পড়ে মন্দিরের সন্ন্যাসীরা তাদের স্বামী ও পরিবারের সাথে কথা বলে বিবাহবিচ্ছেদের ব্যবস্থা করে দিতেন। সেই থেকেই এই মন্দির এই নামে পরিচিত। ১২৮৫ সালে কামাকুরার শাসক হোজো তোকিমুনের স্ত্রী লেডি হোরিউচি স্বামীর মৃত্যুর পর এই মন্দির নির্মাণ করেন। এই মন্দির মূলত মেয়েদের জন্যই তৈরি হয়েছিল। এমনকি ১৯০২ সাল পর্যন্ত এই মন্দিরে কোনও পুরুষের প্রবেশ নিষেধ ছিল। এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন প্রতিষ্ঠাতা স্বয়ং। এখন অবশ্য এই নিয়ম বহাল নেই। তবে আজও জাপানের বহু অসহায় মহিলার আশ্রয় স্থল এই বৌদ্ধ মন্দিরটি।